বাগেরহাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে দুই পরিবহনকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা
মো. মিজানুর রহমান সাগর, বাগেরহাট প্রতিনিধি বাগেরহাটে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে দুটি পরিবহন সংস্থাকে ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছে প্রশাসন। বুধবার দুপুর ও বিকালে জেলা প্রশাসনের দুইটি পৃথক অভিযানে বলেশ্বর পরিবহনকে ৮ হাজার এবং ইমা পরিবহনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তড়িৎ চন্দ্র শীল এর নেতৃত্বে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে অভিযান চালিয়ে বলেশ্বর পরিবহনকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে জরিমানা করা হয়। এ সময় বিআরটিএ ইন্সপেক্টর ওমর ফারুক ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে, ৪৯ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি-র ক্যাপ্টেন মুশফিক ও সদর এসিল্যান্ড এসএম নুরুন্নবী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ইমা পরিবহন কাউন্টারের ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন-কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। যাত্রীদের নিকট থেকে আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ ঘটনাস্থলেই ফেরত দেওয়া হয়। এসিল্যান্ড এসএম নুরুন্নবী জানান, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতিটিকিটে ১৫০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন অনিয়মে জিরো টলারেন্স নীতিতে চলা হবে।” যাত্রী রায়হান পাইক অভিযোগ করেন, “ঢাকা যাওয়ার টিকিট আগে ছিল ৬৫০ টাকা, কিন্তু ঈদের কারণে এখন তা ১ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। এটা সাধারণ ও নিম্ন আয়ের যাত্রীদের জন্য ভীষণ কষ্টদায়ক।” বাস টার্মিনালের একাধিক কাউন্টার সূত্র জানায়, বাগেরহাট থেকে চট্টগ্রামগামী টিকিট ১১০০ টাকার জায়গায় ১৬০০ টাকা এবং ঢাকাগামী টিকিট ৬৫০ টাকার জায়গায় ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। --- বাস মালিক সমিতির নেতৃত্বেও অনিয়ম, দ্রুত নির্বাচনের দাবি মালিকদের অন্যদিকে, বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস মালিক সমিতির কার্যক্রম নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাস মালিকরা। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন না দিয়ে একটি অস্থায়ী আহ্বায়ক কমিটি বেআইনিভাবে সমিতি পরিচালনা করছে। জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সমিতির পুরাতন নেতৃত্ব পালিয়ে গেলে, বিএনপি নেতা মশিউর রহমান সেন্টু-কে আহ্বায়ক করে এবং ইসলামী আন্দোলনের নেতা মো. শহিদুল ইসলাম-কে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা থাকলেও কয়েক মাস অতিবাহিত হলেও এখনো নির্বাচন হয়নি। বহু বাস মালিক অভিযোগ করেন, “এই অবৈধ কমিটি ইচ্ছামত চাঁদা আদায় করছে, কাউকে জবাবদিহি করছে না। ব্যক্তিগত স্বার্থে তারা নির্বাচন দিচ্ছে না।” এ বিষয়ে আহ্বায়ক মশিউর রহমান সেন্টু বলেন, “আমাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, নির্বাচন আমরাও চাই। কিছু প্রতিকূলতার কারণে সময়মতো নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে শিগগিরই তা হবে বলে আশা করছি।” অতিরিক্ত চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চাঁদা আদায় করছি। কোনো অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়নি।” --- পাঠকের জন্য মন্তব্য: যাত্রীসেবার অন্যতম প্রধান মাধ্যম বাস পরিবহন। অথচ এই সেবা খাতে অতিরিক্ত ভাড়া, অনিয়ম এবং নেতৃত্ব সংকট সাধারণ মানুষের যাত্রা আরও কঠিন করে তুলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে নিয়মিত মনিটরিং এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে এ অব্যবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।

আপনার অনুভূতি কী?






