নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষার দাবি।
সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে দেশজুড়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে এমন কিছু সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা ইসলামী শরিয়াহ ও কুরআনের শিক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রতিবেদন নির্দিষ্ট একটি মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত, যা দেশের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিবেদনের ভাষা, যুক্তি ও উপস্থাপনাপদ্ধতি জাতীয় ঐক্য বিনষ্টের ঝুঁকি তৈরি করছে। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এতে বিজাতীয় চিন্তা ও পরিবারবিরোধী রুচির প্রতিফলন ঘটেছে। বিশেষত, ‘ধর্মীয় আইনের কারণে নারী বৈষম্যের শিকার’ — এমন মন্তব্য ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানার সামিল। উত্তরাধিকার আইন সংশোধনের সুপারিশ এবং বৈবাহিক সম্পর্ককে পশ্চিমা কাঠামোতে বিচার করার প্রস্তাব আমাদের পারিবারিক ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। দেশের আলেমসমাজ ও ধর্মপ্রাণ নাগরিকরা মনে করেন, সংস্কার হতে হলে তা দেশের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতার আলোকে হতে হবে। পশ্চিমা মূল্যবোধের ভিত্তিতে কোনো সংস্কার চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টাকে জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। এছাড়া, সংবিধানে “আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস” পুনঃস্থাপন এবং বহুত্ববাদের নাম করে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা থেকে সরে আসার দাবি জানানো হয়েছে। সমকামীতা ও ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ধর্মীয় অনুভূতিকে উপেক্ষা করে নীতিনির্ধারণের প্রবণতা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মত প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যু প্রসঙ্গে বক্তারা ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলা, ভারতের মুসলিমদের উপর নিপীড়ন এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার দাবি করেছেন। বিশেষত ৫ মে শাপলা চত্বর, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং ইসলামপন্থী জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানানো হয়। সর্বোপরি, বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের নামে পেইড এনজিও বা বিদেশি প্রভাবিত মতাদর্শ বাস্তবায়নের চেষ্টা বন্ধ করে জনগণের বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। জনগণের ধর্মীয় অধিকার ও বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যাবার যেকোনো চেষ্টার প্রতিবাদে দেশের জনগণ প্রস্তুত আছে।

আপনার অনুভূতি কী?






