"ডিজিটাল চেঞ্জমেকার জাহেদ: সাইবার নিরাপত্তায় কিশোরদের পথপ্রদর্শক"
নিজস্ব প্রতিবেদক:—সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার উদীয়মান তরুণ ফ্রিল্যান্সার জাহেদ আল হাসান মাত্র ১৮ বছর বয়সেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন কার্যকর ডিজিটাল চেঞ্জমেকার হিসেবে। কিশোর-কিশোরীদের সাইবার নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তি বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে তার গৃহীত কার্যক্রম ইতোমধ্যেই জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালে তিনি “iSafeBD” নামের একটি সাইবার সুরক্ষা প্রকল্প চালু করেন, যার অধীনে কিশোর বয়সীদের জন্য অ্যাপ-ভিত্তিক একটি অনলাইন সাপোর্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। এই অ্যাপের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা গোপনীয়ভাবে চ্যাট সাপোর্ট নিতে পারে, অভিযোগ জানাতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে পারে। বর্তমানে এই সেবাটি পরীক্ষামূলকভাবে চলছে, তবে ২০২৫ সালের মধ্যেই এটি পূর্ণাঙ্গভাবে উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জাহেদ। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের অনেক কিশোর-কিশোরী সাইবার বুলিং বা ডিজিটাল হয়রানির শিকার হয়, কিন্তু সাহস করে কাউকে জানাতে পারে না। আমরা চাই তারা যেন নির্ভর করতে পারে এমন একটি বিশ্বস্ত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।” ২০২৪ সালের বন্যায় দ্রুত ডিজিটাল সহায়তা ব্যবস্থা: ১,০০০+ মানুষের মুখে হাসি ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ওসমানীনগর ও আশপাশের এলাকায় হাজার হাজার মানুষ যখন পানিবন্দি অবস্থায় ছিলেন, তখন জাহেদ এবং তাঁর iSafeBD টিম দ্রুত গঠন করেন একটি ডিজিটাল রেসপন্স সিস্টেম। যুব রেড ক্রিসেন্টের সহযোগিতায় পরিচালিত এই কার্যক্রমে ডিজিটাল ফর্ম, মোবাইল হেল্প ডেস্ক ও গুগল ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় মানুষদের কাছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষের কাছে খাবার, ওষুধ, শিশু খাদ্য এবং জরুরি পণ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এই উদ্যোগ স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে। জাহেদ বলেন, “আমরা শুধু ত্রাণ দিইনি, মানুষের হাতে সম্মান নিয়ে সাহায্য পৌঁছে দিয়েছি। তারা যেন মনে করে—এই সহায়তা তাদের প্রাপ্য।” ‘ওসমানীনগর উদ্যোক্তা মেলা ২০২৪’-এর অন্যতম সংগঠক তরুণ উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করতে ও তাদের প্রচার-প্রসারে সহায়তা করতে ২০২৪ সালে ‘ওসমানীনগর উদ্যোক্তা মেলা’ আয়োজন করা হয়, যেখানে জাহেদ ছিলেন প্রধান উদ্যোক্তা, কনসেপ্ট ডিজাইনার ও মিডিয়া টিম প্রধান। এই মেলায় প্রায় শতাধিক উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন এবং এটি তরুণ সমাজে ব্যাপক সাড়া ফেলে। অতীতে সামাজিক পরিবর্তনের নেতৃত্বে জাহেদ আল হাসান কেবল অনলাইনেই নয়, বরং মাঠপর্যায়ে নানা কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সময় সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তব পরিবর্তন এনেছেন। • বন্যাকালীন রেসকিউ ও ত্রাণ বিতরণ • রাস্তার অবস্থা সংস্কার • ট্রাফিক চিহ্ন লাগানো ও জনগণকে নিয়ম শেখানো • তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে আয়োজন • কিশোরদের নিয়ে সাইবার সচেতনতা সেমিনার আয়োজন এইসব কার্যক্রমে স্থানীয় যুব সমাজের শতাধিক সদস্যকে তিনি একত্রিত করে সুসংগঠিত প্ল্যান ও অ্যাকশন নিয়ে মাঠে নামেন। কোথাও বক্তৃতা, কোথাও সিএনজি ঘুরে মাইকিং, আবার কোথাও নিজ হাতে ব্যানার টানিয়ে রাস্তার কাজ করেছেন। পারিবারিক অনুপ্রেরণা জাহেদের এ পর্যন্ত আসার পেছনে রয়েছে এক শক্তিশালী পারিবারিক সহায়তা। তাঁর বাবা আলহাজ্ব আবুল কালাম তাঁর নৈতিক সাহসের বড় উৎস। জাহেদ বলেন, “আমার এই পথচলায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে আমার মা, আমার ভাইয়া ও পুরো পরিবার। তারা না থাকলে আমি আজকের জাহেদ হতাম না।” সম্মাননা ও স্বীকৃতি • National Tech Award 2024–এ ‘ডিজিটাল চেঞ্জমেকিং’ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ তরুণ • International Digital Business Award 2025–এ আন্তর্জাতিক বক্তা হিসেবে মনোনয়ন • সিলেট বিভাগের কনিষ্ঠ ফ্রিল্যান্সার ও সামাজিক প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি • iSafeBD-এর মাধ্যমে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে সাইবার সচেতনতা সেমিনার আয়োজন

আপনার অনুভূতি কী?






