‘আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলার একটি মুহূর্তও আক্ষেপ করি না’
ভারত সফরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যাওয়ার পর থেকেই আলোচনা—টি-টোয়েন্টিতে এটাই শেষ সিরিজ এই অলরাউন্ডারের। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগে সে ঘোষণা আসার ব্যাপারেও ছিল ব্যাপক আলোচনা। অবশেষে সেই কথাই সত্যি হলো। টেস্টের পর আজ টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসরের ঘোষণা দিলেন ৩৯ ছুঁই ছুঁই মাহমুদউল্লাহ। শনিবার ১২ (অক্টোবর) হায়দরাবাদের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলবেন তিনি। এর আগে ভারতের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে রিয়াদের অন্তর্ভূক্তি সবাইকে চমক দিয়েছিল। এরপর প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন তিনি। ২ বলে ১ রান করে তিনি সাজঘরে ফেরেন। একপেশে ম্যাচটিতে বাংলাদেশের হারের পর অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের অবসর নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। এরপর আজ (মঙ্গলবার) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসেই চলমান সিরিজ দিয়ে রিয়াদ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ভারত সিরিজের অনুশীলন শুরুর সময়ই এসব নিয়ে আলোচনা করা শুরু করেছিলাম। পরিবার শুরুতে বোঝেনি, তারা ভেবেছিলো এটা সঠিক সময় নয়। আমি নানাভাবে পরিবারকে বুঝিয়েছি, এরপর তারা বুঝেছে। তারপর আমি বোর্ড সভাপতি এবং নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আরও যোগ করে বলেন, আমি মনে করি, এটাই সঠিক সময়। এই সংস্করণ থেকে সরে গিয়ে সামনে ওয়ানডে যা আছে, সেদিকে মনোযোগ দেয়ার। আমার জন্য এবং পরের (টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপের কথা ভাবলে, দলের জন্যও এটাই সঠিক সময়। কেনিয়ার বিপক্ষে ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। এখন অবধি ১৩৯টি ম্যাচ খেলে ১১৭.৭৪ স্ট্রাইক রেট ও ২৩.৪৮ ২ হাজার ৩৯৫ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ৪৬টি ম্যাচে দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন রিয়াদ। দীর্ঘ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ভালো-খারাপ দুই রকম সময়ই গেছে মাহমুদউল্লাহর। এই লম্বা যাত্রায় কোনো আক্ষেপ? মাহমুদউল্লাহ বেশ জোর দিয়েই বললেন, আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলার একটি মুহূর্তও আক্ষেপ করি না। একই প্রসঙ্গে পরে আবার রিয়াদ বলেন, নাহ আলহামদুলিল্লাহ, আমার কোনো আক্ষেপ নাই। আমার এক ফোঁটাও আক্ষেপ নাই কারণ বাংলাদেশ দলের হয়ে দীর্ঘ দিন খেলা খুবই ভালো ব্যাপার। ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য। আমি যতটুকু খেলেছি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, সম্ভবত ২০০৭ সালে আমার অভিষেক হয়েছে, আর এখন ২০২৪ সাল, ১৭ বছর। আমি জানি না কতটুকু ভালো করতে পেরেছি বা আমি কতটুকু করেছি দলের জন্য। কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি দলকে সেবা দিতে। ২০১৬ বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর খুব কাছাকাছি ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওই ম্যাচে ৩ বলে ২ রান করতে পারেনি তারা। তিন বলেই উইকেট যায়, এর মধ্যে ছিলেন রিয়াদও। ওই ম্যাচটিই তার ক্যারিয়ারের হতাশার বলে জানিয়েছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। সঙ্গে জানিয়েছেন সেরা মুহূর্তের কথাও। তিনি বলেন, হতাশাজনক মুহূর্ত বললে আমি বলবো ২০১৬ সালে ব্যাঙ্গালোরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি। ওটা আমার অন্যতম হতাশার মুহূর্ত। সম্ভবত আমার জীবন বদলে দেওয়া মুহূর্ত। আমি মনে করি আমার জন্য অনেক বড় শিক্ষা ছিলো সেটা। আর সেরা মুহূর্ত সম্ভবত নিদাহাস ট্রফি। যে ম্যাচটা আমরা জিতলাম। ওটা আমার সেরা মুহূর্ত।
আপনার অনুভূতি কী?