জাতীয় ৮ দিবস বাতিলের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিবৃতি

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চসহ জাতীয় আটটি দিবস বাতিলে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বর্তমান সরকার শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনাবিরোধী কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। আজ বুধবার (‌১৬ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান সরকার শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনাবিরোধী কাজ করে আসছে। সুপরিকল্পিতভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্টে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের শত্রুজ্ঞান করছে। জাতীয় রাজনীতি থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নির্মূল করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করছে, মিথ্যা মামলায় গণগ্রেফতার চালাচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশে নৈরাজ্যবাদ কায়েম করেছে, যাকে মাৎস্যন্যায় বলা চলে। সরকারের অদক্ষতা ও অনাচারে অতিষ্ঠ মানুষ ইতোমধ্যে বলতে শুরু করেছে, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহকর্মীবৃন্দ, দেশের মুক্তিকামী জনতা ও তার পরিবারের অবদান অমোচনীয়। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণের শিকার হচ্ছে মুক্তির লড়াইয়ের সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রতীকী স্থাপনাসমূহ এবং এসবের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত জাতীয় দিবসসমূহ রাষ্ট্রাচার থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এর আগে আজই প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেয়া পোস্টে জানানো হয়— ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস বাতিল হচ্ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ বলে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের জাতীয় ইতিহাস থেকে এসব দিবসের তাৎপর্য কোনো বিবেচনাতেই অস্বীকার করা যাবে না। রিসেট বাটন চেপে কেউ আমাদের দাবায়া রাখতে পারবা না। আমাদের প্রত্যাশা, হিংসা ও বিদ্বেষের বিপরীতে সকলের যাবতীয় ও জাতীয় ভুলগুলো অন্ধকারে হারিয়ে যাক, আমাদের অন্যায়গুলো বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াক এবং সকল অপশক্তি বিনাশের জন্য আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হোক- ‘সত্য বল, সুপথে চল।’ বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের বিদ্বেষে বাতিল হতে চলা দিবসগুলো বাঙালি বরাবরের মতো সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে পরম মমতায় পালন করে দৃঢ়ভাবে বলে উঠবে, আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে। ‘রিসেট বাটন’ চেপে বাঙালির জাতীয় ইতিহাস মুছে ফেলার মাধ্যমে বিভেদ ও প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির রাজনীতিকে পরিপুষ্ট করতে চাওয়ার অভিপ্রায় বাঙালি জাতি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছে বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সমগ্র জাতি ও মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে হীন পদক্ষেপের উপযুক্ত জবাব দেবে।

অক্টোবর 16, 2024 - 18:09
 0  2
জাতীয় ৮ দিবস বাতিলের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিবৃতি

আপনার অনুভূতি কী?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow