শৃঙ্খলার স্বার্থে এখনই সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের: রাজধানীতে চলছে।
টি.এম. রবিউল ইসলাম, ঢাকা— রাজধানীতে চলমান ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার আড়ালে এক ভয়ংকর বাস্তবতা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সম্প্রতি খিলগাঁও এলাকায় একজন চালকের সঙ্গে আলাপচারিতায় বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি জানান, গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা হলেও বর্তমানে আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে কিস্তিতে টাকা তুলে ঢাকায় অটোরিকশা চালাচ্ছেন। তার বক্তব্যে উঠে আসে, তিনি ও তার মতো আরও প্রায় ১৫০ জন গ্রামের আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত থেকে এখন ঢাকায় এসে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাচ্ছেন এবং গ্রামে ফিরবেন না যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসে। এই স্বীকারোক্তি থেকেই বোঝা যায়, রাজধানীর রাস্তায় অটোরিকশার নামে একটি সুশৃঙ্খল ছদ্মবেশী চক্র সক্রিয় রয়েছে। গ্যারেজ দখল, টোকেন বাণিজ্য ও সন্ত্রাসী তৎপরতার মাধ্যমে এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে নগরজীবনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে। অটোরিকশা গ্যারেজগুলোর মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ আজও বড় একটি অংশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের হাতে। গত কিছুদিন ধরে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাটারিচালিত অটোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলে দেখা যায়, সেইসব চালকরা রাস্তা অবরোধ, ভাঙচুর এবং সহিংসতা শুরু করে। এ ঘটনাগুলো যেন পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রেরই অংশ। রাজধানীর গুলশান-বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় চালকদের এই সন্ত্রাসী আচরণ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুও এই অপ্রশাসিত পরিবহন ব্যবস্থার ভয়াবহ দিক তুলে ধরেছে। শিক্ষার্থীরা ৮ দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। যদিও তাদের দাবি যৌক্তিক, বাস্তবে এই অবৈধ অটোরিকশাগুলো বন্ধ করা হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই চক্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান বাড়াতে হবে। রাজধানীর গ্যারেজগুলোতে অভিযান চালিয়ে রাজনৈতিক দোসরদের চিহ্নিত করা এবং শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। রাজধানীর ২.৫ কোটি মানুষকে জিম্মি করে রাখা এই ব্যবস্থার অবসান না হলে কোনো উন্নয়ন বা শৃঙ্খলা সম্ভব নয়।

আপনার অনুভূতি কী?






