সুপারের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ, চৌগাছায় মানববন্ধন

যশোর প্রতিনিধি যশোরের চৌগাছা দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসার সুপার শাহানাজ পারভীনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারি নিয়োগ বাণিজ্য ৩১লাখ এবং ১৮টি কম্পিউটারে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ করেছেন খোদ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবকরা। এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে মাদ্রাসার সুপার শাহানাজ পারভীনের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কমসূচি পালিত হয়েছে। পরে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি সুস্মিতা সাহার কাছে স্মারকলিপি দেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানাযায়, সরকার থেকে ২০১৪ সালে ১৮ টি কম্পিউটারসহ সম্পূর্ণ ল্যাব নিমার্ণের জন্য মালামাল আসে। কিন্তু ল্যাব নিমার্ণ না করেই মালামালসহ ১৮টি কম্পিউটার বিক্রিয় করে দেন মাদ্রাসার সুপার। এদিকে ২০২২ সালে গোপনে তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী পদে দুইজনকে নিয়োগ দেন। এ নিয়োগ থেকে ৩১ লাখ হাতিয়ে নেয়ার খবর জানাজানি হলে তিনি বিদ্যালয়ের উন্নয়নমুলক কাজ করবেন বলে স্থানীয়দের জানান। কিন্তু এ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মাটি ভরাট করেন এবং বাকি টাকা আত্মাসৎ করেন তিনি। আরও জানাযায়, এ প্রতিষ্ঠান থেকে ২০০৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক ভাবে দাখিল ফলাফল ভাল করে গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করে। এরপর ২০১৪ থেকে ফলাফল বিপর্যায়ে হতে শুরু করে এবং তার ধারাবাহিকতাই ২০২৪ সালে ২৯ জন পরিক্ষার্থী দাখিল পরিক্ষার অংশ গ্রহন করে তার মধ্যে থেকে ২৮ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। এর পিছনে মুল কারিগর মাদ্রাসার বর্তমান সুপার শাহনাজ পারভীন বলে মনে করেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা। প্রতিষ্ঠানের সহকারী সুপার মাসুদুর রহমান, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক শাহীনুর রহমান ও বজলুর রহমান বলেন, আমরা সুপার শাহনাজ পারভীনের কাছে জিম্মি। তিনি যা বলেন তা হয়। আমাদের কোন কথা শোনে না। দিঘড়ী, কাকুড়িয়া, মাধবপুর এই তিন গ্রামের মিলে ১৯৯৮ সালে দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থী পড়াশুনা করলেও বর্তমানে ১৫০/২০০জন শিক্ষার্থী পাওয়ায় কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, দিন যত যাচ্ছে শিক্ষার্থী তত কমে যাচ্ছে। অভিভাবকরা এখন আর এখানে ছেলে-মেয়েদের পাঠাতে চাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলবে এক সময়। এ প্রতিষ্ঠান বাচাঁতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বাস জানান তারা। এ প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণীর ছাত্র মুরসালিন, রকিব হোসেন বলেন, ম্যাডামকে (মাদ্রাসার সুপার শাহনাজ পারভীন) সালাম দিলেও উত্তর নেয় না। সব সময় রাগী দেখায়। কথা বলে না।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার শাহনাজ পারভীন বলেন, নিয়োগে এতো বেশি টাকা নেয়া হয়নি। একটি কম নেয়া হয়েছে।’ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম রফিকুজ্জামান বলেন, অভিযোগ জানার পর তাকে (মাদ্রাসার সুপার) জিজ্ঞাসা করেছিলাম; তিনি নিয়োগ বানিজ্য ও কম্পিউটার বিক্রি বিষয়ে সভাপতিকে দোষারোপ করেন।’ চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি সুস্মিতা সাহাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অক্টোবর 3, 2024 - 20:04
 0  3
সুপারের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ, চৌগাছায় মানববন্ধন

আপনার অনুভূতি কী?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow