অভয়নগরে মুজাদখালী নদীতে ৫গ্রামে মানুষের মাঝে কুমির আতঙ্ক, প্রাণে বাচলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধসহ ২ জন!

যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলা ভৈরব ত্রিমোহনী উপর দিয়ে মুজাদখালী নদীতে ৫গ্রামে মানুষের মাঝে কুমির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

আগস্ট 17, 2024 - 13:58
আগস্ট 17, 2024 - 14:40
 0  2
অভয়নগরে মুজাদখালী নদীতে ৫গ্রামে মানুষের মাঝে কুমির আতঙ্ক, প্রাণে বাচলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধসহ ২ জন!

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি :

যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলা ভৈরব ত্রিমোহনী উপর দিয়ে মুজাদখালী নদীতে ৫গ্রামে মানুষের মাঝে কুমির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসময় প্রাণে বাচলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধসহ ২ জন ব্যক্তি। এ কারণে মাছ ধরছেন না জেলেরা। জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলা ভৈরব ত্রিমোহনী উপর দিয়ে বয়ে গেছে মুজাদখালী নদী। সুন্দরবন হয়ে খুলনা রুপসা ও শিপসা নদী ভৈরব নদীর সাথে মিশেছে। তাই এ নদীতে কুমিরের আসাটা স্বাভাবিক। তবে বনের ভেতর থেকে নদী হয়ে লোকালয়েও চলে আসছে কুমির। ফলে কুমিরের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে আছেন এ অঞ্চলের জেলেরা। কুমিরের ভয়ে নদীতে নামা বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। অনেকেই খেয়েছেন কুমিরের তাড়া। স্থানীয় জেলেরা জানান, বিভিন্ন নদ-নদীতে বড় বড় কুমির বিচরণ করছে। কুমিরের আক্রমণে আহত হওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। ভয়ে এলাকার লোকজন নদীতে নামছে না। মাছও ধরতে পারছেন না। এতে জেলে পরিবার গুলোতে শুরু হয়েছে দুর্দিন। স্থানীয় এলাকাবাসী পল্লব বিশ্বাস, সমীরণ বিশ্বাস, বিষ্ণুপদ বিশ্বস জানান, বছরের এ সময়টায় শিবসা, হাপর খালী, ভদ্রাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে কুমিরের আনাগোনা বেড়ে যায়। সম্প্রতি উপজেলার জয়রাবাদ গ্রামের এক বাসিন্দা নারায়ণ বিশ্বাস(৭২) নদীতে গোছল করতে যেয়ে কুমিরের লেজের বাড়ি খেয়ে আহত হন। এছাড়া উপজেলার মুজাদখালী নদীতে খেয়া পারাপারে সময় কুমির লেজ দিয়ে বাড়ি মারে বিমল কান্তিকে। এ এলাকায় ৪/৬ টি কুমিরের বিচরণ দেখে অনেকেই নদীতে গোসল করেছেন না অনেকেই। তারা আরও জানান,শনিবার বিকালে উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের মুজাদখালী নদীর তীরবর্তী নলামারা গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৫৮) নদীতে মাছ ধরতে যান। হঠাৎ একটি কুমির তার সামনে ভেসে ওঠে। মাছ ধরা বাদ দিয়ে ভয়ে দৌড়ে বাড়ি চলে যান। সুদিপ্ত কুমার বলেন, নদীতে মাছ ধরে কোনোমতে সংসার চালাই। কিন্তু প্রায়ই মুজাদখালী নদীতে কুমির ভাসছে। আবার ডাঙায়ও উঠে আসছে। ভয়ে নদীতে নামতে পারছি না।কুমিরের কথা শুনে আমার বাড়ি থেকেও মাছ ধরতে যেতে দিচ্ছে না। সম্প্রতি মুজাদখালী নদীতে রাজাহাঁস, চিলেনহাঁস, পাতি হাঁস নামলে কুমির টেনে নিয়ে যায়। প্রতিদিন কুমিরের চলাচল থাকায় এ এলাকায় কুমির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়ে কেউ নদীতে নামছে না। সরেজমিনে দেখা যায়, জয়রাবাদ শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় সাড়ে চার ফুট একটি বড় কুমির ভাসতে দেখা যায়। কুমিরটি ওই স্থান থেকে নলামার সামনের দিকে যেতে থাকে। এতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। জয়রাবাদ দক্ষিনপাড়ায় একটি জায়গায় মুজাদখালী নদীতে রাজাহাঁস,চিলেনহাঁস, পাতি হাঁস পানিত নেমে গোসল করতে থাকে। ওই জায়গায় কুমিরটি অবস্থান নেয়। ইউপি সদস্য বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, আমাদের এ অঞ্চলের মানুষ নদীর ঘাটে নামতে পারছে না। কেউ কোন কাজ করতে পারছে না। ৫গ্রামে মানুষের মাঝে কুমির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বন বিভাগের লোক এসে কুিমর মারতে নিষেধ করেছে। আহত নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, আমি নদীতে গোসল করতে যায়। নামার আগেই একটি বড় কুমির লেজ দিয়ে আঘাত করে। আমার হাত ও পায়ে ক্ষতের দাগ রয়েছে। কোন মতে প্রাণে বেচেঁছি।নদীতে কুমির দেখার বিষয়টি স্বীকার করে মৎস্য কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, আমি জেলেদের সতর্ক করেছি। এছাড়া উপজেলার ৫টি জেলে পল্লীতে খবর দেওয়া হয়েছে। এবং জয়রাবাদ ও নলামারা এলাকায় সব বয়সের মানুষদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের সাথে কথা বলবো। সিদ্ধিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন, এলাকাবাসীদের ও জেলেদের সতর্কতার সঙ্গে নদীতে নামার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ কুমির একটি বিপন্ন প্রাণী। তাই জেলেদের সতর্কতার সঙ্গে মাছ ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কুমিরের বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম আবু নওশাদ বলেন, কুমির তো সীমানা চেনে না, খাদ্য ঘাটতি পড়লেই তারা উপরের নদ-নদীতে চলে আসে। আমরা বন বিভাগের সাথে এখনই কথা বলছি।

আপনার অনুভূতি কী?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow