জ্যামাইকা টেস্ট: এগিয়ে থেকে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ, চাপে ক্যারিবীয়রা
জ্যামাইকা টেস্টে তৃতীয় দিনটা দারুণ কেটেছে বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট করে ১৮ রানের লিড পায় মেহেদী হাসান মিরাজের দল। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সেই লিড নিয়ে গেছে ২১১ রান। চতুর্থদিনে আজ আবার ব্যাট হাতে নামবে বাংলাদেশ। হাতে আছে এখনও ৫ উইকেট। তাই বলাই যায় এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে আরও বড় লক্ষ্য দিতে পারবে বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ওভারেই উইকেট হারায়। প্রতিদিন ব্যর্থতার নতুন নতুন গল্প লেখা জয় এই ইনিংসে শূন্য করে ফিরেছেন। মুমিনুলের অসুস্থতার কারণে এই ইনিংসে তিনে ব্যাট করার সুযোগ পান শাহাদাত হোসেন দিপু। ব্যাটে এসে তিনি কাউন্টার অ্যাটাক শুরু করেন। যদিও তিনি দীর্ঘক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। তবে আত্মবিশ্বাস দেখানো এই ব্যাটার খেলেন ২৮ রানের (২৬ বলে) কার্যকরী ইনিংস। এরপর চারে নামা মিরাজ ও ওপেনার সাদমান ইসলামও আক্রমণাত্বক ব্যাটিং শুরু করেন। ফলে ওই সেশনে মাত্র ২০ ওভারে আসে ১১০ রান। আর লিড বেড়ে দাঁড়ায় ১২৮। বাংলাদেশ উইকেট হারায় দুটি। তৃতীয় সেশনে ২১.৪ ওভার ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে আরও ৮৩ রান যোগ করেছে বাংলাদেশ। তবে ব্যাড লাইটের কারণে শেষ সেশনে আগেভাগেই খেলা শেষ করতে হয়েছে আম্পায়ারদের। সব মিলিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪১.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের লিড ২১১ রানের। ২৯ রানে ক্রিজে আছেন জাকের আলী। ৯ রানে অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছেন তাইজুল ইসলাম। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনে ৪৭ বলে ২০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন। অসুস্থতার জন্য মুমিনুল হক তৃতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামেননি। প্যাড পরে ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে দেখা গেছে মুমিনুলকে। দ্বিতীয় সেশনে দারুণ ব্যাট করা সাদমানকে শেষ সেশনে খেলা শুরুর দ্বিতীয় ওভারে হারায় বাংলাদেশ। শামার জোসেফের করা স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার জশুয়া দা সিলভাকে ক্যাচ দেন ৮২ বলে ৪৬ রান করা সাদমান। এর মধ্য দিয়ে ভেঙেছে মিরাজের সঙ্গে তার তৃতীয় উইকেটে ৭৪ বলে ৭০ রানের দারুণ এক জুটি। দ্বিতীয় সেশনে দারুণ ব্যাট করা মিরাজও ফিরেছেন কিছুক্ষণ পরই। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬তম এবং শেষ সেশনের ষষ্ঠ ওভারে আউট হন ৩৯ বলে ৪২ রান করা মিরাজ। এবারও শিকারি সেই শামার জোসেফ। লেগ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার সিলভাকে ক্যাচ দেন মিরাজ। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে তাকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাঁচে নামা লিটন দাসের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে খুব প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর এক জুটি গড়েন জাকের আলী। তাদের ৫২ বলে ৪১ রানের জুটি ভেঙেছে ৩৪তম ওভারে জাস্টিন গ্রিভসের দারুণ এক অফ কাটারে। ১২ রানে শামারের বলে জীবন পাওয়া লিটন গ্রিভসের অফ কাটার বুঝতেই পারেননি। ৩৪ বলে ২৫ রানে বোল্ড হন। এরপর সাতে নামা তাইজুল ও জাকের মিলে দিনের বাকিটা সময় পার করেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে নাহিদ রানার বলে কাঁধে চোট পাওয়া পেসার কেমার রোচকে দ্বিতীয় সেশনে মাঠে ফিল্ডিংয়ে দেখা যায়নি। তৃতীয় সেশনে বাংলাদেশের ইনিংসে ২৮তম ওভার শেষে মাঠে ফেরেন রোচ। ৫ ওভার বোলিং করলেও বিপদ তৈরি করতে পারেননি। স্যাবাইনা পার্কে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের নজির আছে। ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই লক্ষ্য তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতেছিল ক্যারিবিয়ানরা। তবে আজ চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের লিড স্বাভাবিকভাবেই আরও বাড়বে। মুমিনুল এখনও ব্যাটিংয়ে নামেননি। এখনও ৫ উইকেট হাতে রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে বলা যায়, শক্ত অবস্থানে থেকেই দিন শেষ করে মিরাজবাহিনী। তবে দেখা যাক, আজ সেই লিডকে কতদূর এগিয়ে নিতে পারেন জাকির-মুমিনুল-তাইজুলরা। চতুর্থদিনের খেলা শুরু হবে রাত পৌনে ৯টায়।
আপনার অনুভূতি কী?