ভয়াল দুর্ভিক্ষের হাতছানিতে তালার প্রাণীকুল

বি এম বাবলুর রহমান (-সাতক্ষীরা) ভয়াল দুর্ভিক্ষের হাতছানিতে তালা উপজেলার প্রাণীকুল,খাদ্যাভাব অবধারিত, পরিত্রাণ খুঁজে ফেরে ছিন্নমূল মানুষ। অতিবৃষ্টি ও নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের ফলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি, যথাযথ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকা, ফসলি জমি, মৎস্য ঘের তলিয়ে, জলমহল ইজারা নিয়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নেটপাটা দিয়ে পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, সার্বিক পরিস্থিতিতে ধুলিসাৎ হয়ে গেছে কৃষকের জীবন, পানিতে ভেসে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট,প্রানে বাঁচাতে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে দীর্ঘ প্রতিক্ষা। পানিবাহিত রোগ প্রকোপ আকার ধারণ করেছে। সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই যথাযথ ঔষধ সরবরাহ তার উপরে প্রকৃতি যেন বেঁকে বসেছে। নানাবিধ সংকটে এই জনপদের মানুষ। মধ্যবিত্ত দের চাপা কান্না, গরিবের আর্তনাদ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বাজার মনিটরিং নেই, ইচ্ছে খুশিতে চলছে সিন্ডিকেট দিয়ে ব্যাবসা। নাজেহাল সাধারণ মানুষ।তালা উপজেলা সরকারী তথ্য মতে ২৫৫৩ হেক্টর আমন ধানের জমি তলিয়ে গেছে,বেসরকারী ভাবে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে ধান পচে গলে গেছে। শতকরা ৮৫ ভাগ ধানের জমিতে পানি। উপজেলা সকল সবজি খেত পানিতে তলিয়ে গেছে খাদ্যশস্য উৎপাদন তলানিতে উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের খাবার সংকট অবধারিত। এই উপরে আবার সরকারী হিসাবে উপজেলার মিঠা পানি ৬৪৫০ হেক্টর এবং লোনা পানি ১২৯৫ হেক্টর মৎস ঘেরের মধ্যে ৯০৫ হেক্টর আয়তন,১০২৭ টি ঘের তলিয়ে গেছে। বেসরকারী ভাবে কয়েক হাজার হেক্টর মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে তছনছ হয়ে গেছে। কোথাও কোন মৎস্য ঘের অবশিষ্ট নেই। খাদ্য সংকট সহ অর্থনীতি সংকটে এই জনপদের মানুষ। মানব খাদ্যের উপসর্গগুলো থেকে গোখাদ্য উৎপাদন হয়, যখন মানব খাদ্যে উৎপাদন বিনষ্ট সেখানে গোখাদ্য উৎপাদনের সম্ভাবনা নেই। আর গোখাদ্য উৎপাদন না হওয়ার ফলে খামারীরা রয়েছে উভয় সংকটে, পানির দামে বিক্রি করতে হচ্ছে খামারে থাকা গরু, ছাগল হাঁস, মুরগি। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্র তালার জেয়ালা ঘোষপাড়া সেখানে খামারে থাকা গাভীদের যথাযথ খাবার সরবরাহ না করতে পারার দুধ উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের কারনে নানা রোগে আক্রান্ত যাচ্ছে গাভী। তবে সরকারী ভাবে কিছু ছাগল খামারে বিভিন্ন ভ্যাকসিন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে তবে সেটি যথাযথ নয়। সরকারী তথ্য মতে উপজেলায় গাভীর খামার ৩৭৬৫ টি, এড়েগরু মোটাতাজাকরণ ২৫৯০ টি,ছাগলের খামার ২১৯ টি,ভেড়ার খামার ১৯ টি,শুকরের খামার ১০টি,মুরগির খামার ৬২৩ টি এর মধ্যে লেয়ার ৭৬ ব্যয়লার ১৭৬ সোনালী ৫৫২,হাঁসের খামার ১৭ টি,কোয়েল ০৭,টার্কি ০৫ টি আছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের তথ্য তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নেই বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা।তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে প্রপ্ত তথ্যে জানা যায় ২৫-৩০% খামারির ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।তবে সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার প্রায় সকল পানিতে তলিয়ে গেছে,আর এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সকল খামারিরা হতাশাগ্রস্থ হয়েছে। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে খামার করে এখন কিস্তির টাকা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তাদের।কি ভাবে কোন উপায়ে বাঁচাতে পারে এই জনপদের মানুষ তার কোন যৌক্তিক সমাধান নেই, সরকারী ভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি এখনো। ভয়াল দুর্ভিক্ষের হাতছানিতে তালার জনপদ। উপজেলা একাধিক মানুষ মনে করেন সরকারী ভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের স্থায়ী সমাধান করা সহ পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা প্রদান করা অতিব জরুরী। অন্যথায় চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি সহ আইনশৃঙ্খলা অবনতি সম্ভব রয়েছে।

নভেম্বর 11, 2024 - 17:11
 0  3
ভয়াল দুর্ভিক্ষের হাতছানিতে তালার প্রাণীকুল

আপনার অনুভূতি কী?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow