ভৈরব নদকে ধ্বংস করতে আবারো মরিয়া হয়ে উঠেছে কতিপয় প্রভাবশালী দখলবাজ
যশোরের শিল্প ও বাণিজ্য নগরী নওয়াপাড়ার প্রাণ ভৈরব নদকে ধ্বংস করতে আবারো মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী দখলবাজ। কোনভাবেই ভৈরব নদকে দখল বাজদের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এবার নদীর মাঝ পর্যন্ত প্রায় দখলে নেয়ার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে অনেকে। ফলে নদের নাব্যতা হ্রাস পেয়ে তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে, যা সামাল দিতে সরকারকে শত কোটি টাকা ব্যয় করে নদী ড্রেজিং অব্যাহত রাখতে হচ্ছে। তবে নদ খেকো'রা নদের উপর এমন ভাবে থাবা বসাচ্ছে যার কারণে সরকারের ড্রেজিং ব্যবস্থার সুফল ও সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে যেতে বসেছে। আর আর এসব কিছু দেখেও কেন যে মাথা ব্যাথা নেই নদী-বন্দর কর্তৃপক্ষের তা বোধগম্য নয়।সরেজমিনে দেখা যায়, ইতঃপুর্বে যে সমস্ত ঘাটে বাঁশের জেটি বানিয়ে মালামাল উঠা-নামা করা হতো সে সমস্ত ঘাটে বিভিন্ন ধরনের গাছের ঘুড়ি পাইলিং করে নদীর প্রায় ২০ থেকে২৫ ফিট দখল করে ইট পাথরের খোয়া দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। ভরাট জেটির উপর লং-বুম নামক এস্কেভেটর স্থাপন করে কার্গো থেকে চাল, গম, সার, কয়লা, পাথর, সিলেট বালি ইত্যাদি নামানো হয়। লং-বুম বসানোর জন্য প্রায় প্রতিটি ঘাটে নদের মধ্যে এই ধরনের জেটি নির্মাণ করার ফলে ভৈরব নদের জোয়ার-ভাটা মারাত্মকভাবে বিঘ্ন ঘটছে। যার জন্য পলিমাটি জমে নদটি আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নওয়াপাড়া বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নওয়াপাড়া নদীবন্দর এলাকায় পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করার পরও নদটি দ্রুত পুনঃ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে বলেন, নওয়াপাড়া নদী বন্দরের লবণ মিল ঘাট, মহাকালের দিপু স্টোন ঘাট, নূর সিমেন্ট ঘাট, মাস্টার ঘাট, মালোপাড়া ঘাট, মশরহাটির পরশ -আটা, সুজি- ময়দা মিলের ঘাট, সিডল্ টেক্সটাইল মিল ঘাটের উপর নির্মিত ডলার ঘাট ও নওয়াপাড়া বোয়ালমারী পুলের নিকটস্থ এলাকায় স্থাপিত জয়েন্ট ট্রেডিং এর ঘাটে অবৈধ ভাবে নদের মধ্যভাগের দিকে ২০ থেকে ২৫ ফিট পেলাসাইডিং তৈরি করে বালির বস্তা, ইটের আধলা, পাথর সহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে জেটি নির্মাণ করে নদীর স্রোতকে মারাত্মকভাবে বাঁধাগ্ৰস্ত করে রেখেছে। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা আরো জানান, অবৈধভাবে নদ দখলের কারণে নদের বাঁক পরিবর্তন হয়ে নদের স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অতি দ্রুত দখল রোধ করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে নদটি খালে পরিণত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। নওয়াপাড়া হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোল্লা মোঃ মাসুদ রানা বলেন, ভৈরব নদের ঘাট গুলোতে অটোমেটিক ক্রেন বসালে তাতে নদের কোন ক্ষতি হবে না তবে অবৈধভাবে নদ দখল করে জেটি নির্মাণ করার ফলে ভৈরব নদীর নাব্যতা দিনে দিনে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভৈরব নদ না বাঁচলে এ বন্দরে খেটে খাওয়া প্রায় দশ হাজার ঘাট শ্রমিকের সাথে জড়িত প্রায় আধা লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। যে কারণে অতি দ্রুত নদে গড়ে ওঠা অবৈধ জেটি গুলো অপসারণ করে নদটিকে বাঁচানোর জন্যে বিআইডব্লিউটিএ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি। জাতীয়- 'দৈনিক অভয়নগর' পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক শাহীন হোসেন জানান, নওয়াপাড়া ভৈরব নদ শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর নামকরণের প্রধান উৎস। এই ভৈরব নদীর উপর হাজার হাজার,লাখো লাখো মানুষ জীবিকা নির্বাহের ভরসাস্থল। তাই এই ভৈরব নদকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সকলের সহযোগিতা একান্তই কাম্য
আপনার অনুভূতি কী?