রাবিতে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন; প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল
মো. রাফাসান আলম, রাবি প্রতিনিধি।।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কোরআন পোড়ানো দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও দেখা যায়নি তেমন কোনো পদক্ষেপ। জমা হয়নি কোনো তদন্ত প্রতিবেদন। তারই প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করছে রাবি শাখা ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শুরু হয় এই বিক্ষোভ মিছিল। সেখান থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে জ্বোহা চত্বরে অবস্থান নেন তারা। এ সময় "বাংলাদেশ ছাত্রশিবির, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ", "শিবিরের অ্যাকশান ডাইরেক্ট অ্যাকশান", "আল কোরআনের অপমান, সইবে নারে মুসলমান", "আল কোরআনের আলো, ঘরে ঘরে জ্বালো", "নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার", "আমরা সবাই রাসুল সেনা, ভয় করিনা বুলেট বোমা" এমনসব শ্লোগান দেন তারা। বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ইসলামী ছাত্রশিবির রাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক হাফেজ মেহেদী হাসান বলেন, তারা জানেন কিছু দুষ্কৃতিকারী গত ১২ তারিখ কুরআনে আগুন দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের এই কলিজার ভিতর আগুন দিয়েছে। আমরা বলে দিতে চাই, তোমরা ঘুঘু দেখেছো ফাঁদ দেখোনাই। তোমরা যে কুরআনে আগুন দিয়েছো, এই আগুনের স্ফুলিঙ্গের মাধ্যমে তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রশাসনকে বলতে চাই যারা এই কাজ করেছে তাদেরকে এই জোহা চত্বরে প্রকাশ্যে ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে। যদি এজন্য ছাত্রশিবিরকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাঠে ময়দানে উপস্থিত থাকতে হয়, তারপরেও আমরা থাকবো। যদি শহীদ হতে হয় আমরা শহীদ হতেও রাজি আছি। তারপরেও আমরা এই কোরআনের অবমাননা মেনে নিতে রাজি নই। এসময় ইসলামী ছাত্রশিবির রাবি শাখার প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক নওসাজ্জামান বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকটি হলে কয়েকদিন আগে কুরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু তাদের দোসররা এখনো অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের টার্গেট বাংলাদেশের দুইটি বিভাগ রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম বিভাগ। আমি ষড়যন্ত্রকারীদের বলে দিতে চাই আপনারা যে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন আমরা তা রুখে দিয়েছি। আমি জানিয়ে দিতে চাই যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রশাসন তদন্ত ও বিচার করছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই সংগ্রাম থাকবে। এ সময় ইসলামী ছাত্রশিবির রাবি শাখার সভাপতি মুস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, কুরআন আমাদের হ্রদয়ের স্পন্দন।কুরআনকে পুড়িয়ে আমাদের হ্রদয়ে যে আঘাত দেওয়া হয়েছে, মৃত্যু দিয়েও এমন কষ্ট দেওয়া যায় না। কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মর্মাহত। রাবিতে যারা দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে আমরা তাদের পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করে কুরআনের বিপ্লব ঘটাবো। মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা ও ছাত্র শিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সেক্রেটারি ও বিভিন্ন কর্মীরাসহ প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হল, শহীদ হবিবুর রহমান হল, মতিহার হল, মাদার বখ্শ হল ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলে শনিবার (১২জানুয়ারি) ও তার আগে (১০জানুয়ারি) রাবির সেন্ট্রাল মসজিদে কোনো এক সময়ে কে বা কারা পবিত্র কোরআন শরীফে অগ্নিসংযোগ করেছিল। তবে এখন পযর্ন্ত ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।
আপনার অনুভূতি কী?