কোরবানির ঈদ সামনে রেখে খুলনায় গরু চুরির হিড়িক: আতঙ্কে খামারিরা
সিরাজুল ইসলাম খুলনা প্রতিনিধি- খুলনার তেরখাদা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। গত এক মাসে উপজেলায় অন্তত ১০-১২টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এ অবস্থায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক ও খামারিরা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের খামারিরা অভিযোগ করেছেন, রোজার ঈদের পর থেকেই গরু চোরদের তৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে গভীর রাতে চোরের দল কোনো না কোনো বাড়িতে হানা দিয়ে ট্রাকে করে গরু নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শুক্রবার রাতে উপজেলার জুনারী গ্রামে খাঁন বাবর আলীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে তার গোয়ালঘর থেকে ৫টি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত গরুগুলো বর্তমানে থানা হেফাজতে রয়েছে এবং প্রকৃত মালিক যাচাই-বাছাই করে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ওসি আরও জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাবর আলী পালানোর চেষ্টা করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এবং আরও একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খাঁন বাবর আলীর নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু চুরি করে এনে জবাই করে মাংস বিক্রি করত। তারা এই অপরাধের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ চুরির ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৭ মে) দিবাগত রাতে। উপজেলার হিজলতলা গ্রামের কবির শেখের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গাভী এবং বিল্লাল মোল্যার দুইটি গাভী চুরি হয়ে যায়। কবির শেখ জানান, "রাতে প্রতিদিনের মতো গরুগুলোকে খাইয়ে দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে যাই। গভীর রাতে চোরেরা ঘরের দরজায় ছিটকিনি মেরে বাইরে থেকে আটকে দেয় এবং গোয়ালঘর থেকে গরুগুলো ট্রাকে করে নিয়ে যায়।" ঘটনার পর থানায় ফোন করলে ওসি আজগড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জকে ঘটনাস্থলে পাঠান। এ ছাড়া উপজেলার বলরধনা গ্রামের রবিউল শেখের গোয়ালঘর থেকে সম্প্রতি একটি গাভী চুরি হয়। একই রাতে অশোক মল্লিকের বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে বাড়ির লোকজন টের পেয়ে গেলে চোরেরা পালিয়ে যায়। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, তেরখাদা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। এসব এলাকায় সক্রিয় রয়েছে চোরের একাধিক সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। সাধারণ মানুষ ও খামারিরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, চোরচক্রের মূলহোতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এ চুরির মাত্রা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

আপনার অনুভূতি কী?






