শিশু আয়ানের মৃত্যু: ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইলেন বাবা
নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা।। সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী দুই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইলেন তার বাবা শামীম আহমেদ। এ সময় তিনি ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছেন। শিশু আয়ান আহমেদ। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে সময় সংবাদের প্রতিবেদকের কাছে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ দাবি জানান। এ দিকে আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় সকালে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত দ্বিতীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপর শুনানি করেছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ। শুনানি শেষে আগামী ৫ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসক ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ সংক্রান্ত তদন্ত রিপোর্ট দেখে হাইকোর্ট বলেছেন, রিপোর্টে দেখছি সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া চলছে। এটা তো সিরিয়াস এলিগেশন (গুরুতর অভিযোগ)। এ সময় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পরে হাইকোর্ট এ তদন্ত রিপোর্ট নথিভুক্ত করেন এবং এ সংক্রান্ত রুল শুনানির জন্য প্রস্তুত করতে নির্দেশ দেন এ বিষয়ে আয়ানের বাবার আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম বলেন, শুনানিতে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পরিচালনার বিষয়টিকে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। তিনি বলেন, ‘ওই হাসপাতালে সুন্নতে খৎনার জন্য অতিরিক্ত অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দুই চিকিৎসক ও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দেখে উচ্চ আদালত এ মন্তব্য করেন।’ হাইকোর্ট বলেছেন, তারা আইন সম্পর্কে জানতে চান। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে আইনের কোথায় সমস্যা আছে, তা বুঝে পর্যবেক্ষণ দেবেন আদালত। ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়ানের খৎনা হয়। তখন তাকে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করা হয়। এরপর মৃত্যু পর্যন্ত তার আর জ্ঞান ফেরেনি। ভুল চিকিৎসা এবং অবহেলার কারণে আয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করে পরিবার। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা দায়ের করেন আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ। পরে এ ঘটনায় দেয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট লোকদেখানো (আইওয়াশ) ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট পরে গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার তদন্তে নতুন কমিটি গঠন করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। কমিটিতে তিন জন চিকিৎসক, দুই জন সিভিল সোসাইটির ব্যক্তি ও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে রাখা হয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে আয়ানের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। সোহওয়ার্দী হাসপাতালের অধ্যাপক ডাক্তার এ বি এম মাকসুদুল আলমকে এ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরেও কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারলে গত বছরের নভেম্বরে উচ্চ আদালত ২০২৫ সালের ১২ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন
আপনার অনুভূতি কী?