নওয়াপাড়া পৌরসভার আড়াই হাজার পানিবন্দি মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ
নওয়াপাড়া পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের আড়াই হাজার পানিবন্দি মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পৌর বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি'র সহযোগিতায় পানিবন্দি মানুষের দুঃখ দুর্দশা কিছুটা লাঘোবের আশায় এই খাবার বিতরন করা হয়। পৌর বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি জানান, গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে শত শত পরিবার। পানি প্রবেশ করে বসতবাড়িসহ রান্নাঘর, গোয়ালঘরে। রাস্তাঘাট ও বাড়ির উঠান পানিতে থই থই করছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। রান্নাঘরে পানি উঠে যাওয়ায় রান্নাবান্না করা সম্ভব হচ্ছেনা। পরিবারের মহিলা ও শিশুদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে শত শত পরিবারগুলি। আর্থিক সংগতি থাকা সত্বেও এক রকম না খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ওইসব পানিবন্দি মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে গত রোববার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাজার ঘাট করে সারা রাত জেগে বাবুর্চি দিয়ে রান্না করিয়েছি। পরে ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের মাধ্যমে এবং ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ও আশপাশের ইউনিয়নের পানি বন্দি মানুষের বাড়িতে বাড়িতে রান্নাকরা খাবার নিয়ে উপস্থিত হয়। এসময় পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সম্রাট হোসেন এর দায়িত্বে ২নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান সাগর ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন এর নেতৃত্বে ওই সব এলাকার পানিবন্দি মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে রান্না করা খাবার পৌছে দেয়। ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার পানিবন্দি পরিবারের নিকট আমি নিজে রান্না করা খাবার নিয়ে উপস্থিত হই। এসময় আমার সাথে সহযোগীতা করে ৫নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জহির রায়হান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেনসহ ওই এলাকার নেতৃবৃন্দ। এছাড়া তালতলা-রাজঘাট এলাকায় আকরাম কোরাইশি পাপ্পু, রাজু আহমেদ ও সুমন হোসেনসহ ওই এলাকার নেতৃবৃন্দ পানিবন্দি মানুষের মাঝে খাবার পৌছে দেয়। এছাড়া পায়রা ইউনিয়নের বিভিন্ন পানিবন্দি মানুষের মাঝে তরফদার সজলসহ ওই এলাকার নেতৃবৃন্দ এই রান্না করা খাবার পৌছে দেয়। এমনি করে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। পায়রা ইউনিয়নে রান্নাকরা খাবার বিতরণকারী তরফদার সজল জানান, নওয়াপাড়া পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি’র সহযোগীতায় পৌরসভার পাশাপাশি আমরা ইউনিয়নবাসির কাছেও রান্নাকরা খাবার পৌছাতে সক্ষম হয়েছি। মানুষ মানুষের জন্য তার এমন উদাহরণ দেখিয়েছেন আসাদুজ্জামান জনি। এতে পানিবন্দি মানুষ জনি’র জন্য অনেক দোয়া করেছে এবং তার এই সহযোগীতা যেন অব্যহত থাকে সেই দাবি জানিয়েছে। ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সম্রাট হোসেন জানান, নওয়াপাড়া পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা সঠিকভাবে না থাকায় এবং ড্রেনগুলি যথা সময়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার না করায় আজকে এই জলাবদ্ধতা তৈরী হয়েছে। পৌরসভার দীর্ঘদিনের অবহেলিত কাজগুলি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না করলে এভাবে পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। এছাড়া আপনারা জানেন এই ৬নং ওয়ার্ডের মধ্যে একটি সরকারী হাসপাতাল রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে। অথচ হাসপাতাল জুড়ে হাটু পানি। এটা নতুন নয়। দীর্ঘদিন যাবৎ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা তৈরী হয়। কিন্তু পৌর মেয়র ও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের যেন নজরেই আসেনি। এই সমস্যা সমাধান করতে হলে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া সম্ভব নয়। তাই অতিদ্রুত পৌরসভার এই ভোট ডাকাতির মাধ্যমে গড়ে ওঠা মেয়র কাউন্সিলরদের বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন জনপ্রতিনিধি তৈরী করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।
আপনার অনুভূতি কী?