অভয়নগরে অবৈধ দখলে টেকা নদী হারাতে বসেছে ঐতিহ্য, দুর্ভোগে লাখো মানুষ
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি যশোরের অভয়নগর-মণিরামপুর দুই উপজেলার সীমান্তে টেকা নদী। এই নদীর জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মৎস্য খামার ও বসতবাড়ি। ফলে দিনদিন নদী সস্কুচিত হওয়ায় নদী তার স্বাভাবিক নব্যতা হারিয়ে ফেলছে। তাছাড়া এ নদীতে বর্ষার মৌসুমে এক শ্রেনীর অসাধু মাছ শিকারীরা নদীতে নেট পাটা ব্যবহার করে। স্রোতের গতীধারা ব্যবহত করায় প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। প্রান্তিক চাষিরা তাদের জমিতে ফসল উৎপাদনে ব্যর্থ হয়। এছাড়া হাজার হাজার মৎস্যচাষিদের ভেসে যায় মৎস্য খামার। এ সব দখল উচ্ছেদ অভিযান প্ররিচালিত না হওয়ায় দিনদিন দখলদারিত্ব বেড়ে যাওয়ায় কালের আবার্তে হারিয়ে যেতে বসেছে টেকা নদী ঐতিহ্য। বর্তমানে নির্মিত ব্রিজটির কাজ শেষ না হওয়ায় মানুষের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। চলাচলের একমাত্র কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার লাখ লাখ বাসিন্দা। ভবদহের ২৭ বিলের পানি এ নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শ্রীহরি ও মুক্তেশ^রি নদী দিয়ে বের হয়। নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ার সকল প্রতিবন্ধকতা ও দখল উচ্ছেদে অভিযান জরুরি হয়ে পড়েছে বলে এলাকা বাসীর অভিমত। নদীর নব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদী খননের জন্য সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দকৃত টাকা সিংহভাগ লুটপাট হয়। নদী খননের মাটি নদীর পাড়েই ফেলে রাখা হয়। বর্ষার মৌসুমে ওই খননকৃত মাটি আবার নদীতে গিয়ে পড়ে নদী ভরাট হয়। ফলে ভবদহ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হয় না। এ ছাড়া প্রায় ৩শ’ ফুট প্রস্থের নদীটির উভয় তীরে ২শ’ ৭০ ফুট মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। ৯০ দশকে নির্মিত হয় টেকা নদীতে ব্রিজ। ব্রিজটি দুর্বল হয়ে পড়ায় ২০২০ সালে পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজের নির্মান কাজ শুরু হয়। দুই উপজেলার মানুষের চলাচলের জন্য ওই নদী ভরাট করে অস্থায়ি ভাবে মির্মিত হয় কাঠের সেতু। দির্ঘদিন নতুন ব্রিজের কাজ নির্মান কাজ শেষ না হওয়ায় এবং কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ের দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। বুধবার সকালে সরোজমিনে যেয়ে দেখা যায়, বয়ারঘাট খাল থেকে শুরু করে ভবদহের ২১ ভেন্ট ¯øুইচগেট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার। এই তিন কিলোমিটার এলাকায় নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠন ও মৎস্য খামার এবং বসতবাড়ী। ৩০ ফুটের কাঠের সেতু জুড়ে শেওলা আর কাঠের বড়বড় গুড়ি পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এ কারণে ভবদহের ২৭ বিলের পানি টেকা নদী দিয়ে বের হতে না পেরে অভয়নগরে ৩০টি গ্রামের মানুষ পানিববন্দি রয়েছে। গত ১০ অক্টোবর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আমিরুল হক এবং যশোর জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম এলাকাটি পরিদর্শন করেন। তারা পানি প্রবাহে বিঘœসৃষ্টিকারী প্রতিবন্ধকতা দূর করার নির্দেশ দেন। অদ্যবদি নির্দেশ মোতাবেগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় জনমনে চরম ক্ষোপ বিরাজ করছে। ওই এলাকার বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম জানান, নদীর উপর নির্মিত কাঠের সেতু, অবৈধ নেট পাটা না সরালে বিলের পানি নিষ্কাশন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। নদীর বুকে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেললে এবং নদী পুন খনন করলে এ পানি দ্রæত নিষ্কাশন সম্ভব। এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে সবব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার অনুভূতি কী?