কুষ্টিয়া থেকে জীনের বাদশা ধরে আনলো পিবিআই
যশোর প্রতিনিধি: জ্বীনের বাদশা পরিচয় দিয়ে নানা ধরণের প্রতারণা চক্রের এক সদস্যকে কুষ্টিয়া থেকে আটক করেছে পিবিআই যশোরের সদস্যরা। আটক ফারুক হোসেন ওরফে খোকন ভোলা জেলার বোরহানউদ্দীন উপজেলার ফুলগাছিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদিনের ছেলে। সোমবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়া জেলার খোকশা উপজেলার গোপগ্রাম বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল মল্লিকের ছেলে গোলাম রসুল বাদী হয়ে মঙ্গলবার চৌগাছা থানায় খোকনসহ তিন প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অন্য আসামিরা হলেন, ভোলা জেলার বোরহানউদ্দীন উপজেলার ফুলগাছিয়া গ্রামের আলামিন ও আনোয়ার। মামলায় রসুল উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে আব্দুল্লাহ বিবাহিত এবং উচ্ছৃঙ্খল । তাদের ধারনা ছিলো ছেলেকে জ্বীনের আছর করছে। এরমধ্যে টেলিভিশনে তিনি মাওলানা হাবিবুল্লাহ নামক হুজুরের একটা বিজ্ঞাপন দেখেন। ছেলেকে চিকিৎসা করানোর জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। তখন আসামী নিজের নাম বলে খোকন ও সে মাওলানা হাবিবুল্লাহ হুজুরের খাদেম পরিচয় দিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য ১২শ’টাকা দাবি করেন। বাদী ওই টাকা দেন। এরপর ০১৭২৪-০৭৫৫৭৮ বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠানো হয়। এরপর বলেন, জ্বীনদের মাধ্যমে চিকিৎসা করাতে হবে এরআগে জ্বীনরা মাজারে মিলাদ দিবে বলে আরও ৪২ হাজার টাকার কথা বলেন। কয়েকদিন পর বাদীকে ওজু করে নামাজের সুরাতে বসতে বলেন। এরপর বলেন রসুলের কপাল খুলে গেছে। জ্বীনেরা মিলাদ শেষ করেই ১৮ কোটি টাকা নিয়ে রসুলের কাছে আসবে। জ্বীনরা মাজারে মিলাদ দিবে বলে আরও ৪২ হাজার টাকার কথা বলেন। কয়েকদিন পর বাদীকে ওজু করে নামাজের সুরাতে বসতে বলেন। এরপর বলেন রসুলের কপাল খুলে গেছে। জ্বীনেরা মিলাদ শেষ করেই ১৮ কোটি টাকা নিয়ে রসুলের কাছে আসবে। এজন্য ৪২ হাজার টাকা নেন। এরপর বলেন ওই টাকার জন্য ব্যাগ লাগবে তারজন্য আরও ৫০ হাজার টাকা নেন। এছাড়া মোহনীয় ফল কিনার জন্য ৮০ হাজার, জীন আটি পরে আসকে তার জন্য ৫২ হাজার টাকা। পরে বলে ৪০ লক্ষ টাকা নিয়ে জ্বীনরা রওনা করছে। পথে ওয়াজ কুরুনীর মায়ের হাতে আটকা পড়েছে। জ্বীনদের উদ্ধারের জন্য এক লাখ ২০ হাজার হাতিয়ে নেয়। এরপর ফুল কেনার কথা বলে আরও ৬৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ওই প্রতারক চক্র। এখানেই শেষ না, ওই মোহনিয় ফল পচে যাওয়া তা ফের কেনার জন্য আরও এক লাখ ৫০ হাজার, দুধ কিনতে ৮০ হাজার, দুধ জালাইতে কড়াই কিনতে ৩০ হাজাসহ বিভিন্ন অজুহাতে সর্বমোট ১৩ লক্ষ টাকা ২০২২ সালের পহেলা মে থেকে ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিকাশে মাধ্যমে পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত বছরের শেষের দিকে বাদীকে বলা হয় ছাড়ের উপর যেয়ে নামাজের পাটিতে বসে থাকতে এবং কথা না বলতে। একপর্যায় রাত ১১ টা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত ছাড়ের উপর বাদী বসে থাকেন। পরে রসুল নিচে নেমে কল করেন। ওপাশ থেকে বলা হয় নিচু নামলে কেন? আর কথা বললে কেন তাই জিন চলে গেছে। এছাড়া জ্বীন যাওয়ার সময় শিশির দারোগার কাছে আটক হয়েছে বলে আরও পাঁচলাখ টাকা দাবি করে। পরে বাদী বুঝতে পারে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। পরে তিনি বিষয়টি পিবিআইকে জানালে পিবিআই যশোরের এসআই রতন মিয়া আসামির মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে আটক করে। এ বিষয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, আটক ফারুক এসব অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া এ চক্রের অন্য সদস্যদের বিষয়ে মুখ খুলেছে। অপর আসামিদের ধরতে পিবিআই মাঠে রয়েছে।
আপনার অনুভূতি কী?