দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার পেলেন বাঙালি বলিউড তারকা মিঠুন
সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা প্রতিনিধি : বলিউডের বাঙালি অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (যার আসল নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্ত্তী) পেলেন ভারতের চলচ্চিত্রের সবথেকে শ্রেষ্ঠ ও সম্মানের পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ভারতের ৭০ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রদান করেন কিংবদন্তি অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে ৷ চলতি বছরের গোড়াতেই পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন অভিনেতা। বর্ষীয়ান অভিনেতা এবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মানে সম্মানিত হলেন ৷ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার নিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়লেন ‘মিঠুন দা’ ৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বার্তা দিয়ে বাঙালিবাবু মিঠুন বলেন, ‘আমি যদি পারি, তাহলে তোমরা অবশ্যই পারবে ৷’ এদিন অভিনেতার পরনে ছিল, অফ হোয়াইট রঙের পাঞ্জাবি আর সাদা ধুতি ৷ সঙ্গে উত্তরীয়। ‘শো রিল’ দেখানোর সময় আবেগঘন দেখায় তাঁকে। হাতে চোট, সেই কারণেই প্লাস্টার হাতে মঞ্চে উঠতে সহযোগিতা নিতে হয়। পুরস্কার গ্রহণের পর দিলেন স্পিচ। মজার ছলে বলা নানা গল্পে মুগ্ধ হলেন দর্শক। এর আগে, ১৯৭৬ সালে, মৃগয়া চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে তাঁর পথ চলা শুরু হয়। বাংলা হিন্দিসহ ৬টি ভাষায় তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্র জগতে প্রায় আটচল্লিশ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা তাকে আরও শ্রেষ্ঠ করেছে। নিজের স্বভাবোচিত ঢঙে মজা করে অভিনেতা বলে চলেন, ‘প্রথম জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর লোকজনের ভূয়সী প্রশংসা পেয়ে আমার মাথা একটু একটু করে খারাপ হতে শুরু করে। যে বিশাল কিছু করে ফেলেছি আমি। ‘ তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়ে তো নিজেকে আলপাচিনো ভাবছিলাম। আমার অ্যাটিটিউড বদলে গিয়েছিল। তার অঙ্গভঙ্গি দেখে হাসতে থাকেন তার সহকর্মীরাই। তবে তার কর্মজীবনে গায়ের রং যে ‘সমস্যা’ হয়ে দাঁড়ায় সে কথা অকপটে জানান মিঠুন। গায়ের রং নিয়ে কটাক্ষের সম্মুখীন হয়েছেন বারবার, জানান অভিনেতা। তার কথায়, ‘গায়ের রং বদলাতে তো পারব না, কিন্তু আমি তো নাচ করতে পারি। এমন নাচ করব, আমার পায়ের সাহায্যে, যে দর্শক আমার পা দেখবেন, তাদের চোখ আর আমার ত্বক, মুখের দিকে না যায়। আমি একেবারে সেটাই করেছি। কোথাও আমার পা থামতে দিইনি।’ নবীন প্রজন্মের উদ্দেশে এরপর অভিনেতা বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু অর্থ নেই তাদের কাছে। তাদের বলব, আত্মবিশ্বাস হারাবে না। টাকাপয়সা না থাকলেও আশা ছাড়বে না। আর স্বপ্ন নিশ্চয়ই দেখবে। মনে রাখবে, নিজে ঘুমিয়ে পড়লেও স্বপ্ন যেন কোনওদিন না ঘুমায়।’ চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি প্রথমে বাম রাজনীতি এবং পরে তৃণমূল এবং বর্তমানে দেশের ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের সঙ্গে রয়েছেন। রাজনীতির পাশাপাশি সমাজসেবা-ও তার অন্যতম নেশা।
আপনার অনুভূতি কী?