পাল্টা হামলা মোকাবেলায় ইরানের ব্যাপক কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ
ইসরায়েলে হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে বেড়েছে ইরানের কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ। তেলআবিবের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে সৌদি আরব, কাতারসহ একের পর এক উপসাগরীয় দেশ সফর করছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলা হচ্ছে, ইসরায়েল যাতে মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন মিত্রদের সহায়তা না পায় সেটি নিশ্চিত করতেই এমন তৎপরতা তেহরানের। এরইমধ্যে, ইরানে হামলায় তেলআবিবকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে বিবৃতি দিয়েছে আরব দেশগুলো। হামাস এবং হিজবুল্লাহ প্রধানকে হত্যার প্রতিশোধে গেল পহেলা অক্টোবর ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। মূলত এরপর থেকেই বেড়েছে তেহরান প্রশাসনের কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ। যার উদ্দেশ্য পাল্টা হামলা ঠেকানোসহ তেলআবিবের ওপর চাপ প্রয়োগ করা। চলতি সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সফর করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। সাক্ষাৎ করেন সৌদি আরব, কাতার, লেবানন, সিরিয়ার প্রতিনিধিদের সাথে। আলোচনা করেন মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে। যাতে প্রাধান্য পায় গাজা-লেবানন ইস্যুসহ ইরানে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার বিষয়টিও। তবে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই দৌড়ঝাঁপকে কূটনৈতিক উদ্যোগের আড়ালে লুকোনো হুমকি হিসেবেও দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, গোপন কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকে ‘গোপন সতর্কবার্তা’ দিয়েছে ইরান। সেই দেশগুলো হলো: জর্ডান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, ইরানে হামলার জন্য ইসরায়েলকে সহায়তা করলে তেহরানের আক্রোশের শিকার হতে পারে দেশগুলো। এরাবিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আলি শিহাবি বলেন, ইরানিরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, যদি উপসাগরীয় দেশগুলো ইসরায়েলের জন্য তাদের আকাশসীমা খুলে দেয়, তবে তা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচিত হবে। তেলআবিবকে সমর্থন করলে তেহরানের মিত্ররা, বিশেষত ইরাক ও ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এর প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি, তেলআবিবের যেকোনো হামলায় সহায়তা করলে উপসাগরীয় দেশগুলো নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে তেহরান। এছাড়াও ইরানের এমন কূটনৈতিক তৎপরতার পেছনে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান আরও পাকাপোক্ত করার চেষ্টা থাকতে পারেও বলে মত বিশ্লেষকদের। অবশ্য, কূটনৈতিক এই দৌড়ঝাঁপে কিছুটা হলেও সফলতা পেয়েছে তেহরান। ইরানে হামলায় ইসরায়েলকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না উপসাগরীয় দেশগুলো। বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার। পাশাপাশি তেহরানের জ্বালানি অবকাঠামোতে সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলা ঠেকাতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে উপসাগরীয় দেশগুলো।
আপনার অনুভূতি কী?