যশোর সমবায় ব্যাংকটি নিজের বাপ-দাদার পৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন ম্যানেজার সাঈদুর রহমান
যশোর প্রতিনিধি: যশোর সমবায় ব্যাংকের ম্যানেজার সাঈদুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তা ব্যাংকটিকে নিজের বাপ-দাদার পৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। আর দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করেছেন কোটি কোটি টাকা। পতিত স্বৈরাচারী সরকারের দোসর সাঈদুর রহমান এখনো পর্যন্ত রয়েছেন বহাল তবিয়াতে। তাকে অবিলম্বে অপসারণসহ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র জানায়, সাঈদুর রহমান দীর্ঘ ৩৪ বছর একই পদে একই স্থানে চাকরি করার কারণে বহু অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসে আছেন ব্যাংকের ম্যানেজার পদে। তিনি সমবায় ব্যাংককে নিজের বাপ-দাদার পৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। একই স্থানে ও পদে ৩৪ বছর কিভাবে চাকরি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদুর রহমান বলেন, আমারা চাকরি স্থায়ী। কোন বদলি নেই। যে কারণে একই স্থানে আছি। নিয়ম রয়েছে, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধনকৃত সমিতির কর্মকর্তাদের নিয়ে সমবায় ব্যাংকের সদস্য করার। কিন্তু সাঈদুর রহমান এক্ষেত্রে নিজের মত আইন করে পচ্ছন্দ সই লোকদেরকে ব্যাংকের সদস্য করেছেন। তার নিজের ভাইসহ আত্মীয়-স্বজনরা সমবায় ব্যাংকের সদস্য করেছেন। সমবায় ব্যাংকের নিজের পচ্চন্দের লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন। যাতে খুব সহজেই অনিয়ম-দুর্নীতি করা যায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাঈদুর রহমান বলেন, ৫০ দশকে যে সব কৃষি সমিতি নিবন্ধনকৃত তারা সমিতির সদস্য। তাদের নিয়েই করা হয়েছে। নিজের ভাই সম্পর্কে বলেন, তিনি বাঘারপাড়ার একটি কৃষি সমিতির সদস্য। যে কারণে তাকে রাখা হয়েছে। সূত্র জানায়, সমবায় মার্কেটের দোকান বরাদ্দ’র ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা অনিয়ম। সাঈদুর রহমানকে খুশি করতে না পারলে কেউ মার্কেটের দোকান বরাদ্দ পায় না। আবার দোকান হাত বদলের ক্ষেত্রেও সাঈদুর রহমানকে খুশি করতে হয়। ছাদ বিক্রির ক্ষেত্রেও একই রকম দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করেন সাঈদুর রহমান। শুধু তাই নয়, সাঈদুর রহমানের নামে বেনামে বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে মার্কেটে। যে দোকানগুলো উচ্চ ভাড়ায় দিয়েছেন তিনি। আর এক্ষেত্রে সমবায় ব্যাংক মোটা অংকের অর্থ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাঈদুর রহমান বলেন, দোকার বরাদ্দ কোন অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি। হাত বদলের ক্ষেত্রে আমার কিছু করার ক্ষমতা নেই। যারা লেনদেন করেন তারা নিজেদের মধ্যে এসব করেন। ছাদ বিক্রি করতে হলে ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী করতে হয়। এর বাইরে আমার কিছু করার নেই। মার্কেটে আমার কোন দোকান নেই। এক সময় দরিদ্র ঘরের সন্তান ব্যাংক ম্যানেজার সাঈদুর রহমান আজ অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে যশোর-নড়াইল সড়কের সাহাপাড়ায় (ভিসা অফিসের পিছনে) গড়েছেন আলিসান বাড়ি। গ্রামের মাঠে কিনেছেন বিঘার পর বিঘা জমি। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যাংক ম্যানেজার সাঈদুর রহমান বলেন, আমি চাকরি করি। বাপের পৈতিক সম্পদ থেকে এসব বানিয়েছি। কোন অনিয়ম-দুর্নীতি করি না।
আপনার অনুভূতি কী?