অভয়নগরের বাজারে ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল: দাম নাগালের বাইরে
শামীম হোসেন: ভরা মৌসুমেও যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাজার গুলোতে ইলিশ মাছের সরবরাহ কমে গেছে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মধ্যেই হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মৌসুমে ইলিশ মাছের প্রচুর সরবরাহ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না। বরং বাজারে ইলিশের আকাল চলছে, যার ফলে দাম ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অভয়নগরের মাছ বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১,৮০০ থেকে ২,২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এমনকি ছোট সাইজের ইলিশও ১,০০০ টাকা থেকে ১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, ইলিশের জোগান কম থাকায় দাম এতটা বেড়ে গেছে। আর এর পেছনে কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করছেন, সাগরে পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়ছে না এবং সরকারিভাবে জারি করা নিষেধাজ্ঞাও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করছে। মৎস্যজীবীরাও এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। তারা জানাচ্ছেন, সমুদ্রের অবস্থা প্রতিনিয়ত খারাপ হচ্ছে, যার ফলে ইলিশের প্রজনন এবং সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এছাড়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও ইলিশের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফলে, মাছ ধরার জন্য সাগরে যেতে হচ্ছে অনেক দূর পর্যন্ত, কিন্তু সেখান থেকেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইলিশ পাচ্ছেন না। বাজারে ইলিশের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, “ভরা মৌসুমেও যদি ইলিশের এই অবস্থা হয়, তবে ভবিষ্যতে হয়তো ইলিশ কেনাই কঠিন হয়ে যাবে।” অনেক ক্রেতা ইলিশের দাম কমানোর জন্য সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সঠিকভাবে মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণ না করলে আগামীতে ইলিশের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। তারা জেলেদের আধুনিক প্রশিক্ষণ, সঠিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পরিবেশবান্ধব মাছ ধরার উপায় শেখানোর ওপর জোর দিচ্ছেন। অভয়নগরের বাজারে ইলিশের এই সংকট মূলত সরবরাহের অভাব এবং উচ্চমূল্যজনিত কারণে সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই দুর্দশা বেড়েছে। সঠিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের প্রয়োজন, যাতে ইলিশের সরবরাহ স্বাভাবিক হয় এবং সাধারণ মানুষ এই প্রিয় মাছটি স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতে পারেন।
আপনার অনুভূতি কী?