বন্যায় আন্তঃরাজ্য সীমান্ত বন্ধ, ব্যবসায়ীদের তোপে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার মমতার
সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: ভারতের ডুম্বুর বাঁধ থেকে ছাড়া পানিতে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল মাসখানেক আগে। যদিও ভারত সরকার সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এবার ডিভিসি, মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে পানি ছাড়া নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরেই দেখা দিয়েছে আন্তরাজ্য কলহ। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের সরকারের মধ্যে বেড়েছে জটিলতা। না জানিয়ে ঝাড়খণ্ড বাঁধ থেকে পানি কেন ছেড়েছে, এর প্রতিবাদে দুই রাজ্যের সীমান্ত ৭২ ঘণ্টার জন্য বন্ধের ঘোষণা দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই রাজ্যের সীমান্ত বন্ধ থাকায় পশ্চিমবঙ্গের প্রবেশমুখে হাইওয়ে সড়কের উপর আটকে পড়ে প্রায় ৫ হাজারেরও বেশী পণ্য বোঝাই ট্রাক। কিন্তু কলকাতার ব্যবসায়ীদের তোপ ও বিক্ষোভের মুখে পড়ে ১২ ঘণ্টা না পেরোতেই মমতা সরকার বাধ্য হয় সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে খুলে দেয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খন্ড সীমান্ত। গত ৪ দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে লাগাতার পানি ছাড়ার ফলে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের ৭ জেলা বন্যা কবলিত হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন লাখ লাখ মানুষ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনকে (ডিভিসি) দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই ডিভিসির ব্যারেজ থেকে পানি ছাড়ার প্রতিবাদে তিন দিন দুই রাজ্যের সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দেন মমতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাজ্য সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে রাজ্য সরকার। লোহার রেলিং দিয়ে আটকে দেয়া হয় ঝাড়খণ্ড থেকে আসা পণ্য বোঝাই সমস্ত ট্রাক। এক পর্যায়ে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইনে তৈরি হয় যানজট। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখা যায় ঝাড়খণ্ডেও। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে যাওয়া পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে যাত্রী বোঝাই বাস, এমনকি ছোট গাড়ি পর্যন্ত ঝাড়খন্ড সীমান্তে আটকে দেয়া হয়। এমন অবস্থায় ক্ষোভ ছাড়েন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দ্লীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন। তাই ঝাড়খণ্ড বর্ডারে হাজার হাজার গাড়ি আটকে রেখেছে। অভিযোগ আনেন, ভারতের আন্তরাজ্য পণ্য পরিবহন আইন লঙ্ঘন করে দেশের সংবিধানকে অপমান করেছেন মমতা। উল্লেখ্য, কলকাতার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের ব্যবসা ও পর্যটন নগরী শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ না খুললেও আগাম নোটিশ না দিয়ে মমতা সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়েছেন। /এমএইচআর
আপনার অনুভূতি কী?