নদীভাঙনে বিলীন ঢালচর: ঘরহারা হাজারো মানুষের আর্তনাদ।
মোহাম্মদ নয়ন চৌধুরী, তজুমদ্দিন (ভোলা) থেকে ॥ চরফ্যাশনের দুইশ বছরের পুরোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ইউনিয়ন ১৯নং ঢালচর আজ ভয়াবহ নদীভাঙনের মুখে। বঙ্গোপসাগর, মেঘনা ও বুড়া গৌরাঙ্গা নদীর স্রোতে প্রতিনিয়ত বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। চরের মানুষ আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ পূর্বপুরুষের ভিটে ছেড়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছেন। সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে নিজেরাই বালিভর্তি পলিথিন বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে ছয়টি সম্পূর্ণ এবং দুটি আংশিক নদীগর্ভে চলে গেছে। ৭২টিরও বেশি পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। জেলে পল্লীর বাসিন্দারা জানান, নদী ও সাগরের ভাঙন তাদের সব আশা-ভরসা ভেঙে দিয়েছে। ঢালচরের ৩০-৪০ হাজার মানুষ মূলত মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মনোয়ারা, সকিনা ও রাবেয়া বলেন, "বর্ষা তো এখনো শুরুই হলো, এর আগেই ঘর নদীতে চলে যাচ্ছে। নতুন ঘর বানিয়েও এখন আবার বিপদের মুখে।" স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে ঢালচরবাসী মানববন্ধন, বিক্ষোভ করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানিয়েছেন, আপাতত ভাঙনরোধে কোনো প্রকল্প নেই, তবে ভাঙনের মুখে পড়া স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সরকারি পদক্ষেপের অভাবে দিশেহারা মানুষগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে একা যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত। তারা দ্রুত নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন

আপনার অনুভূতি কী?






