বর্ণাঢ্য আয়োজন, বৈচিত্র্যময় অংশগ্রহণে বান্দরবানে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
“এসো হে বৈশাখ”— ঐক্য ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে নববর্ষ ১৪৩২ বরণ রিপোর্ট: বান্দরবানে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। “এসো হে বৈশাখ” স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছিল পুরো জেলা শহর। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’, যেখানে অংশ নেয় জেলা পরিষদ, প্রশাসন, পুলিশ, পৌরসভা, আনসার, স্কাউট, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনির নেতৃত্বে শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার, পৌরসভার প্রশাসক এস এম মনজুরুল হকসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীরা। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, “বান্দরবানে পহেলা বৈশাখ মানেই রঙিন উৎসবে বাঙালির প্রাণের সঞ্চার।” পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, “পহেলা বৈশাখ বাঙালির মহা ঐক্যের দিন। বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে সবাইকে এক পথে হাঁটার প্রেরণা দেয় এই দিন।” শোভাযাত্রায় বৈচিত্র্যপূর্ণ মোটিফ, ঐতিহ্যবাহী পোষাক ও নানান জাতিসত্তার অংশগ্রহণ এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এটি শুধু একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন নয়, বরং ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয় বাংলাদেশের এই নববর্ষ শোভাযাত্রা। প্রথমবারের মতো সরকার জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং পার্বত্য এলাকার চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, রাখাইনসহ ২৭টি জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপনে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব আয়োজন করে। বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট আয়োজন করে বৈসু, সাংগ্রাইং, বিজু, বিহু ও সাংলান উৎসব। বান্দরবানের ঐতিহাসিক রাজার মাঠে ১৪-১৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলছে নানা আয়োজন— সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী খেলা, স্বকীয় পোশাক প্রদর্শনী ও গ্রামীণ মেলা। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে এই প্রথমবারের মতো তিন পার্বত্য জেলায় এক দিনের সাধারণ ছুটি ও অন্যান্য অঞ্চলে ঐচ্ছিক ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এই বর্ণাঢ্য আয়োজন প্রমাণ করে, বৈশাখ শুধু একটি দিন নয়— এটি একটি সংস্কৃতি, একটি ঐতিহ্য, আর একটি অভিন্ন পরিচয়ের প্রতীক।

আপনার অনুভূতি কী?






