ক্ষমতার অপব্যবহার ! যশোর সমবায় ব্যাংকের ম্যানেজার একই স্থান ও পদে ৩৪
শরিফুল ইসলাম: কি পাওয়ার ! যশোর সমবায় ব্যাংকের ম্যানেজার একই পদে একই স্থানে ৩৪ বছর ধরে চাকরি করেছেন। ব্যাংকের ম্যানেজার সাঈদুর রহমান নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয় করলেও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। পতিত স্বৈারাচরী সরকারের দোসরদের পুর্নবাসন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন ব্যাংটিকে। পতিত ফ্যাস্টিট হাসিনার দোসর সাঈদুর রহমান এখনো বহাল থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন সময় অঘটন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাঈদুর রহমান ১৯৯০ সালে যশোর সমবায় ব্যাংকের ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ব্যাংকে যোগদানের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোপন পদোন্নতি পাননি। এমনকি তাকে যশোর থেকে অন্যত্র বদলিও করা হয়নি। কোন ক্ষমতা বলে তিনি দীর্ঘ ৩৪ বছর একই স্থানে চাকরি করছেন ? এই প্রশ্ন জেগেছে সাধারণ মানুষসহ যশোর সমবায় মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সূত্র জানায়, সাঈদুর রহমানের নিয়োগ অবৈধ বলে কয়েকজন ব্যবসায়ী দাবি করেছেন। তারা বলছেন, তার নিয়োগ যদি বৈধ হবে তাহলে যখন যারা সরকারে থেকেছে তাদেরকে তেল দিয়ে চাকরি করেছেন। সূত্র মতে, বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস বলা হয়েছে ১ নং বলা হয়েছে, একই পদে ৩ বৎসর অতিক্রান্ত হওয়ার অব্যবহিত পূর্বেই মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও উহার অধীনস্থ দপ্তর/পরিদপ্তসমূহের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে নতুন পদে /স্থানে বদলী করিতে হইবে। যা কর্মকর্তা ও কর্মচারী সকলের ক্ষেত্রে উক্ত আদেশ প্রযোজ্য হইবে রুলসের ৭। (ক) এতে বলা হয়েছে, সরকারি ও বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/দপ্তর/পরিদপ্তর এবং অন্যান্য বদলীযোগ্য কর্মকর্তা যাহারা একই স্থানে/একই পদে তিন বৎসরের অধিককাল যাবত কর্মরত আছেন, তাহাদের অবিলম্বে বদলী করিতে হইবে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীবৃন্দ অবশ্য এই আদেশের আওতাভূক্ত নহে। যা ১৯৮৩ সালের ২২ মে সবায় মন্ত্রিপরিষদ এর সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। (খ) এ বলাপ হয়েছে, উল্লিখিত মন্ত্রিপরিষদ সিদ্ধান্তের কোন ব্যতিক্রম ঘটিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সরকারি আইন ও সরকারি বিধি অনুসারে চাকুরীচ্যুতিসহ যে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। (ইডি/এস এ ১-১৩/৮৩-২৫৭(১০০) তারিখ: ১৩/৬/৮৩ইং রুলসের ১০ বলা হয়েছে, অনেক কর্মকর্তা বর্তমান কর্মস্থলে থেকে বদলীর আদেশ জারি করার পরও নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেন না বরং যাহাতে নূতন কর্মস্থলে যোগদান না হয় এইজন্য কালক্ষেপন করেন এবং বদলী বাতিলের জন্য অবাঞ্চিত তদবিরের আশ্রয় নেন। তাছাড়া অনেক কর্মকর্তা বিশেষ স্থানে বা বিশেষ পদে যাওয়ার জন্যও তদবিরের আশ্রয় নেন। এই ধরনের তদবির ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার আওতায় অসদাচরণ বলিয়া গণ্য করা হয় এবং তাহা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাইতেছে এবং এই ধরনের তদবিরের আশ্রয় নেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হইতেছে। যাহারা এই ধরনের তদবিরের আশ্রয় নিবেন, ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার আওতায় তাহাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হইবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনেও তাহা সন্নিবেশিত করা হইবে। এ রকম আইন থাকার পরও কোন ক্ষমতা বলে ৩৪ বছর ধরে সাঈদুর রহমান এক অফিসে চাকরি করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাঈদুর রহমান বলেন, আমার চাকরি স্থায়ী। কোন ট্রান্সফার নেই। এ কারণে ৩৪ বছর ধরে আছি। নিয়োগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা বলছে, তারা কি আমার চাকরি দিয়েছে ? তারা কিভাবে জানে আমার চাকরি হয়েছে।
আপনার অনুভূতি কী?