টুলুর হাত ধরে যাত্রা শুরু ‘যাত্রা’র

স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে হাতে গোনা যে কজন বাংলা ব্যান্ড মিউজিককে শীর্ষে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের একজন আশিকুজ্জামান টুলু। ‘চাইম’ গড়েছেন, চলে গেছেন। পরবর্তীতে ‘আর্ক’কে শ্রোতাপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে গেছেন। সেই জনপ্রিয়তার মধু না খেয়ে চলে গেছেন ‘দূর পরবাসে’। অনেক দিন ধরেই তিনি বসবাস করেন কানাডাতে। দেশের মাটিতে ব্যান্ড মিউজিকের জীবন্ত এই কিংবদন্তিকে পাওয়া যায় না, শ্রোতাদের এমন আক্ষেপ ছিল। ওপেন এয়ার কনসার্টে টুলুর ‘ওরে আমার পাগল মন’, ‘সেদিনও আকাশে ছিল চাঁদ’, ‘আমার হৃদয়ে তুমি’, ‘হেসে খেলে এই মনটা আমার’, ‘এমন একটা সময় ছিল’, ‘এই দূর পরবাসে’র সঙ্গে তাদের মুখ বা মন মেলাতে না পারার আক্ষেপ বুঝি এবার ঘুচছে। সুরকার, সংগীত পরিচালক ও গায়ক আশিকুজ্জামান টুলুর হাত ধরে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে ব্যান্ডদল ‘যাত্রা’র। যাত্রা ব্যান্ডের সদস্য মূলত চারজন– রদিয়া, নাওয়ার, টিনা ও আশিকুজ্জামান টুলু। মজার ব্যাপার হলো, এরা সবাই টুলুর পরিবারের সদস্য। অর্ধাঙ্গিনী টিনা এবং বাকি দুজন তাদের সন্তান।এ বিষয়ে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে আর্কের প্রতিষ্ঠাতা মজাচ্ছলে লেখেন– ‘বউ, ছেলে, মেয়ে নিয়ে ব্যান্ড করার সুবিধা হচ্ছে ব্যান্ড ভাঙবে না। যাদের ব্যান্ড ভাঙার ইতিহাস ইতোপূর্বে আছে (যেমন আমার), তাদের বেস্ট সলিউশন হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ব্যান্ড করা। সুবিধা হচ্ছে, ব্যান্ডের মেম্বাররা চাইলেও নিজেদের প্রোগ্রাম ফেলে অন্য কারও সঙ্গে ‘ক্ষ্যাপ’ মারতে যেতে পারবে না। আরও সুবিধা হচ্ছে, পুরো পেমেন্টটাই আসে নিজের ঘরে।’ পরিপূর্ণ ব্যান্ড হিসেবে ‘যাত্রা’র আত্মপ্রকাশ ২০২৪ সালে হলেও এর পত্তন আরও কুড়ি বছর আগে। ২০০৪ সালে মিউজিক্যাল ডুয়ো (টিনা ও টুলু) হিসেবে যাত্রার প্রথম যাত্রা। ২০০৪ সালে তাদের প্রথম অ্যালবাম (দ্বিমাত্রিক) প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের একতার মিউজিক থেকে। সেখানে ইন্ডিয়ান ক্ল্যাসিক্যাল কম্পোজিশন ও কিছু ফিউশন করার দারুণ প্রয়াস ছিল। অ্যালবামটাতে কিছু পরীক্ষামূলক কম্পোজিশনও জায়গা পায়। সংগীতবোদ্ধাদের কাছে সেটি সমাদৃত হয়েছিল। সেই যাত্রার দুই দশক বাদে নতুন ব্যান্ডের নামকরণ। তবে এখন তূণে যুক্ত হয়েছে টুলু-টিনার কন্যা রদিয়া ও পুত্র নাওয়ার। সম্প্রতি (২০ ডিসেম্বর) ব্যান্ডদল ‘যাত্রা’কে নিয়ে একটি একক কনসার্টের আয়োজন করে জেবিআর প্রোডাকশন। কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হয় কানাডার টরন্টোর চাইনিজ কালচারাল সেন্টারে। অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘ডাস্ট ইন দ্য উইন্ড’। রক ব্যান্ড কানসাসের বিখ্যাত গানের নামানুসারে।কনসার্টে ‘যাত্রা’র নিজস্ব গান যেমন গাওয়া হয়, পরিবেশিত হয় ‘চাইম’ ও ‘আর্ক’ ব্যান্ডের গানও। আশিকুজ্জামান টুলুর অনবদ্য মৌলিক কম্পোজিশনেরও সাক্ষী হয় শ্রোতারা। কিংবদন্তি শিল্পী শিপ্রা বসু, আলাউদ্দিন আলী, নিলয় দাশ, শাফিন আহমেদসহ বহু জনপ্রিয় গান পরিবেশন করে যাত্রা। কনসার্টে আগত অতিথিরা জানায়, এটি ছিল আক্ষরিক অর্থে একটি গান শোনার কনসার্ট। যেখানে তারা মনোযোগের সঙ্গে গানটাই শুনেছে। উপভোগ করেছে পুরো সময়টা। গানের সাথে সাথে শব্দ ও আলো প্রক্ষেপণের কাজও চমৎকার ছিল।

ডিসেম্বর 28, 2024 - 12:48
 0  5
টুলুর হাত ধরে যাত্রা শুরু ‘যাত্রা’র

আপনার অনুভূতি কী?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow