সুন্দরবনে কাঁকড়া প্রজনন মৌসুম শুরু, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞায় কাঁকড়া আহরণ জেলেরা বিপাকে—
এস কে সিরাজ শ্যামনগর সাতক্ষীরা থেকে।। সাতক্ষীরা রেঞ্জ পশ্চিম সুন্দরবনে নদ-নদীতে কাঁকড়া প্রজনন মৌসুম শুরু হয়েছে। বছরের শুরুর প্রথম এই সময়টি কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। এই সময়ে কাঁকড়া ডিম ছাড়ে এবং বংশবৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে সংবেদনশীল থাকে। বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই মাসের জন্য সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। তবে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে প্রায় ৫হাজার কাঁকড়া আহরণকারিদের সরকারি কোন প্রকার প্রণোদনা না দিয়েই ২মাসের জন্য কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ করায় হতাশ এ পেশার সাথে সংশ্লিষ্টরা মানবতার জীবন যাপন করছে। কাঁকড়া ধরা জেলে আবুল কাশেম বলেন, বর্তমানে আমরা সুন্দরবনের কাকড়া ধরতে না পারার কারণে বেকার জীবন যাপন করছি, পরিবার পরিজন নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই দুই মাসে এই নিষেধাজ্ঞার চলমান থাকা অবস্থায় সুন্দরবনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কাঁকড়া ধরা, বিক্রি ও সংরক্ষণ করতে বা পরিবহন করতে পারবে না। সুন্দরবন বন বিভাগ জানায়, এই সময়টি কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। কাঁকড়া এই সময়ে ডিম ছাড়ে এবং বংশবৃদ্ধির জন্য বিশেষ অবস্থানে থাকে। কাঁকড়া আহরণ চালু থাকলে তাদের প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে। বুড়িগোয়ালিনী বনস্টেশন অফিসার (এসও) মো. জিয়াউর রহমান জানান, সুন্দরবনে নদ-নদীতে কাঁকড়া প্রজনন বৃদ্ধি করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দুই মাসব্যাপী কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকবে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীতে শীলা প্রজাতির কাঁকড়া বেশি পাওয়া যায়। সাগর হতে ঝাঁকে ঝাঁকে কাঁকড়া নদীতে উঠে আসে এবং ডিম পাড়ে। কাঁকড়া প্রজনন নির্বিঘেœ সম্পন্ন করতে টহল জোরদার করা হয়েছে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. মশিউর রহমান জানান, কাঁকড়া বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম একটি প্রাকৃতিক পন্য। ‘সুন্দরবনের কাঁকড়া প্রজাতি শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি সুন্দরবনের খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে। প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়াদের রক্ষা করা না গেলে এর দীর্ঘমেয়াদী সংকট ও নানাবিধও বিরুপ প্রভাব পড়বে পুরো সুন্দরবনের জুড়ে। ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য স্থানীয় জনগণ, জেলে এবং বন সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতায় ১হাজার ৬শ’ বোটের পারমিশন বা (বিএলসি) দেওয়া আছে। দীর্ঘ দুই মাস কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকলে তাদের পরিবার কিভাবে চলবে গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে এসিএফ মশিউর রহমান জানান, এটা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে। এ মুহুর্তে সরকারি কোন অনুদান আসেনি বা এরআগে দেওয়া হয়নি। তবে সরকার প্রণোদনা দিলে তাদের কাছে পৌছে দেওয়া হবে
আপনার অনুভূতি কী?