ড্রোন-আর্টিলারি-বোমা হামলায় বাঁচার কোন জায়গা নেই গাজায়
পুরো গাজা উপত্যকা জুড়ে এখনও ইসরায়েলি সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিশেষকরে, মধ্য গাজা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নুসিরাত শরণার্থী শিবির টার্গেট করে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ চালাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। শনিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি ফাইটার জেট আকাশ থেকে বোমাবর্ষণের পাশাপাশি আর্টিলারি আক্রমণও চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়াও, ড্রোন ব্যবহার করে বেসামরিকদের তাড়া করে চলেছে আইডিএফ। সন্দেহভাজন মনে হলেই ড্রোন থেক্বে গুলি করা হচ্ছে। যদি ড্রোনের গুলি থেকে কেউ বেঁচে যায়, তাহলে আর্টিলারি। এরপরও যদি কেউ বেঁচে থাকে, তাহলে বোমাবর্ষণের মাধ্যমে ‘এনেমি এলিমিনেট’ করছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এদিকে, অনেক আবাসিক বিল্ডিং আছে যেগুলো বেসামরিক লোকে পরিপূর্ণ, সেই বিল্ডিংগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচানো জন্য নুসিরাত শরণার্থী শিবির থেকে দেইর আল-বালাহ ও মাগাজিসহ অন্যান্য শহরে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে গাজাবাসীরা। তবে, তাতেও কোন লাভ নেই অসহায় ফিলিস্তিনিদের। কারণ- ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কোয়াডকপ্টার ড্রোন ও তাদের স্থল বাহিনী দিয়ে এ ধরনের এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর একের পর এক হামলা অব্যাহত রেখেছে। তীব্র বোমা হামলার ফলে উত্তর গাজার বেইট লাহিয়াত এলাকাটি ছিন্নভিন্ন ল্যান্ডস্কেপে পরিণত হয়েছে। একদিকে বিমান হামলার ভয়, অন্যদিকে খাবারের সঙ্কটে পুরো পরিবার নিয়ে প্রাণ যায়-যায় অবস্থা। এভাবেই ক্ষুধা ও শত্রুর সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর সিনিয়র কর্মকর্তা লুইস ওয়াটারিজ জানিয়েছেন, মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে দিন পার করছেন। যেটুকু খাবার পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কেউ খাবার পাচ্ছেন, কেউ না পেয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে অপেক্ষা করছেন, কখন খাবার আসবে। ‘এখানে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, একটি আটার বস্তা নিয়ে লড়াই করছে ৩০ থেকে ৪০ জন। এভাবে চলতে থাকলে সবাই না খেয়ে মারা যাবেন,’ ওয়াটারিজ জোর দিয়ে বলেন। এদিকে, গাজার উত্তরাঞ্চলে দু’টি বহুতল ভবনে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ৫০ শিশুসহ কমপক্ষে ৮৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
আপনার অনুভূতি কী?