সত্য উপলব্ধি না হওয়া প্রর্যন্ত কারবালার ঘটনা তোমার হৃদয়কে কাঁদাবে না!
লেখক: মোঃ মনিরুজ্জামান ইমাম জয়নাল আবেদ্বীন রহঃ অনেক কষ্ট নিজের বুকে চেপে বলেছিলেন; "প্রতিটি দিন আশুরা, প্রতিটি জমিন কারবালা” যাই হোক; যে মানুষ নিজেকে জ্ঞানী মনে করেন তার শেখার রাস্তার সমাপ্তি ঘটে। তাই আমি নিজেকে কখনোই জ্ঞানী মনে করতে চাই না। সেদিনের কথাগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ উপলব্ধি কর হে মুসলিম। কারবালা প্রান্তরে হযরত ইমাম হুসাইন যে কথা বলেছিলেন সেই কথা সরজমিনে না শুনলেও হৃদয় কাঁপিয়ে কানের কাছে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। #একটু আলোচনা করার চেষ্টা করা যাকঃ ইসলাম( শান্তি) এই শব্দটি'কে সাইনবোর্ড করে মুষ্টিমেয় কিছু কথিত মুসলিম যেটা করছে তা ইসলাম(শান্তি) নয়! এই সত্য উপলব্ধি না হওয়া প্রর্যন্ত কারবালার ঘটনা তার হৃদয়কে কাঁদাবে না। রাসুল পরিবারকে অবরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছিল মহরম মাসে, অথচ বর্তমান মুসলিম সমাজের কিছু কথিত এবং মুখোশধারী মুসলিম মনেই রাখেনি মহরম মাসে যুদ্ধ করা কাফের/মুশরিকদের কাজ। একজন মানুষ যদি কারবালা ঘটনার মূল কারণ অনুধাবন করতে চাই, তার পরও বেশিরভাগ সময় তাকে হতাশ হতে হয়, কেননা এজিদের উত্তরসূরিদের সাজানো কলঙ্কিত ইতিহাসে সে সত্য কুসংস্কাররাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে! এবং প্রকৃত সত্য সমাজে উপস্থাপন করা বড় কঠিন কাজে পরিনত হয়েছে। রাসুলের ইসলামকে এমন ভাবে নিজেদের মতো করে সাজানো হয়েছে যে মানুষ সত্য জানার অধিকারও হারাতে বসেছে। এখনো আমাদের (মুসলিমদের) পবিত্র সালাত শেষ করতে হয় রাসুল এবং তার বংশেধরদের নামে দুরুদ ও সালামের মাধ্যমে, রাসুলের এবং তার বংশেধরদের প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ না করে যদি কেউ নামাজ শেষ করে তবে নিসন্দেহে শরিয়ত বা ইসলামি আইন মোতাবেক তার নামায অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। কিন্তু বর্তমান সমাজের কিছু নামধারী মুসলিমের রাসুলের আহলে বাইতের কথা মানতে নারাজ। কারবালায় হযরত ইমাম হোসাইন রাঃ কে হত্যা করতে বিলম্ব দেখে এজিদ সেনাপতি উমর ইবনে সাদ সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিল; তাড়াতাড়ি হোসাইনকে হত্যা কর “ আছরের নামাজের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে নামজ যেন কাযা না হয়ে যায়" কিন্তু এই মুনাফেকি মনে রাখেনি নামাজের মধ্যে বলতে হবে "হে আল্লাহ তুমি মোহাম্মদ (সাঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর কল্যাণ এবং বরকত দান কর” কথিত মুসলিমদের উপলব্ধি হওয়া উচিৎ যে এটা কেমন নামাজি? রাসুল সাঃ এর কলিজার টুকরা ইমাম হুসাইন রাঃ কারবালা ময়দানে এজিদের সৈন্যদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন সেটা শুধুমাত্র উপস্থিত এজিদ বাহিনীর জন্য নয় সেটা অনন্তকালের জন্য একটা হৃদয় কাঁপানো শিক্ষা #তোমরা কি আমাকে চেন না? চেয় দেখ আমি কে? তোমাদের রসূল (সাঃ) এর প্রিয়তম দৌহিত্র হোসাইন আমি! খায়বর বিজয় করা শেরে খোদা হযরত আলী মর্তুজার পুত্র ও খাতুনে জান্নাত ফাতেমাতুয- যোহরার স্নেহের সন্তান আমি। তোমরা কি তোমাদের রাসুলের কথা ভুলে গেছো? আমি ও আমার ভাই হাসান বেহেস্তের সর্দার। তোমাদের কি ক্ষতি করেছি আমি যে তোমরা আমাকে হত্যা করতে চাইছো? আমাকে হত্যা করে তোমরা মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবীব মুহাম্মদ (সাঃ)-এর কাছে কি জবাব দেবে? সেদিন ইমামের কথা সত্য ও মিথ্যাকে এবং মুমিন ও মুনাফেক আলাদা করে চেনার জন্য মুসলিম জাহানের কাছে অনন্তকালের জন্য মহা শিক্ষা। সামনে হাজার হাজার কুরআনের হাফেজ এবং মুফতি থাকার পরও তিনি বলেছিলেন "তোমাদের মধ্যে কি কেউই মুসলমান নেই? আকাশ বাতাস ভারি হয়েছিল সেদিন কারবালার ময়দান রক্তাক্ত হয়েছিল রাসুল পরিবারের রক্তে সেদিন চোখের পানি ফেলেছে কারবালার প্রতিটি বালু কনা, শুধু চোখে পানি আসেনি এজিদ ও মুয়াবিয়ার উত্তরসূরিদের তারা কখনোই কাদবে না এবং আজও কাদেনা। অহংকারী নামধারী মুসলিম এজিদের গোলামরা উপলব্ধী করে না-যে এখন প্রতিদিন তাদের উপর দিয়ে কারবাল ও আশুরা বয়ে যায়। প্রতিনিয়ত অপমানিত লাঞ্চিত হয়, ক্ষমাতার মহে কুকুরের মত নিহত হয়। সেই পবিত্র সত্তার কসম দুনিয়া ছেড়ে যাওয়ার কিছু দিন পরেই পৃথিবীর কেউ তোমাদের মনে রাখবেনা! কিন্তু প্রিয় হুসাইনের জন্য কোটি কোটি চোখের পানি প্রস্তুত রয়েছে হাজার বছর ধরে এবং কোটি কোটি বছর ধরে সেই চোখের পানি শুধু প্রান-প্রিয় হুসাইনের জন্যই ঝরবে। প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলতে মন চাই "মোহর্রম্! কারবালা! কাঁদো ‘হায় হোসেনা!’ দেখো মরু-সূর্যে এ খুন যেন শোষে না!"
আপনার অনুভূতি কী?